আরজি কর-কাণ্ডে বিক্ষোভ। — ফাইল চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ চলছে। হাসপাতালে হাসপাতালে তো বটেই, রাস্তায় নেমে সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। একটাই দাবি, ‘বিচার চাই’। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ব্যাঘাত ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়ে বার্তা পাঠাল কেন্দ্র। প্রতি দু’ঘণ্টা অন্তর এ বিষয়ে রিপোর্ট দিতে হবে সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে, এমনই নির্দেশ জারি করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে রোজই কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে। রাজনৈতিক দলগুলোও বিভিন্ন কর্মসূচি নিচ্ছে। বিক্ষোভ, ধর্না, প্রতিবাদ মিছিলকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর পরিস্থিতিও তৈরি হচ্ছে। পুলিশ মিছিল আটকাতে গেলেই সৃষ্টি হচ্ছে ধুন্ধুমার পরিস্থিতির। শুধু কলকাতা নয়, বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। এমনকি, দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও একই ছবি।
এই পরিস্থিতিতে দেশের সব রাজ্যকে তাদের আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কে তথ্য দিতে বলল কেন্দ্র। রাজ্য প্রশাসনকে এই দায়িত্ব পালন করতে হবে বলে নোটিসে জানানো হয়েছে। দু’ঘণ্টা অন্তর সেই রিপোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে পাঠাতে হবে। ইমেল, ফ্যাক্স বা হোয়াট্সঅ্যাপের মাধ্যমে রিপোর্ট দিতে পারবে রাজ্য। রিপোর্ট যাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কন্ট্রোল রুমে। শুধু তা-ই নয়, যদি কোনও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে তবে তৎক্ষণাৎ তা কেন্দ্রকে জানাতে হবে। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যগুলির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে যাতে সব রকম তথ্য থাকে, সেই কারণেই এই নির্দেশ বলে জানানো হয়েছে। গত ১৬ অগস্ট রাজ্যগুলির কাছে এসে পৌঁছেছে এই বার্তা।
গত ৯ অগস্ট আরজি করের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার রুমে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই প্রতিবাদের ঝড় ওঠে দেশ জুড়ে। দিকে দিকে বিক্ষোভ শুরু হয়। গত ১৪ অগস্ট কলকাতার রাস্তায় মেয়েদের রাত দখল কর্মসূচির মাঝেই একদল দুষ্কৃতী আরজি করে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে র্যাফ নামাতে হয় কলকাতা পুলিশকে। উন্মত্ত জনতাকে রুখতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে তারা। দুষ্কৃতীদের হামলায় কয়েক জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছিলেন বলেও খবর। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত রাজ্য। এই ঘটনার তদন্তে পুলিশ ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে। ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই সঙ্গে আরজি করের সামনে ভিড় নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে লালবাজার জানিয়েছে, ১৮ অগস্ট, অর্থাৎ শনিবার থেকে ২৪ অগস্ট, পরের সপ্তাহের শনিবার পর্যন্ত পাঁচ জন বা তার বেশি মানুষের জমায়েত করা যাবে না।