সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছিল দেশ। ফাইল চিত্র।
বছর পেরিয়ে গেলেও নিয়মবিধি তৈরি হল না সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের।
ঠিক এক বছর আগে ১১ ডিসেম্বর রাজ্যসভায় পাশ হয়েছিল বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। ওই আইন অনুসারে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানে বসবাসকারী হিন্দু, শিখ, পার্সি, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ব্যক্তি যারা সেই দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং সংখ্যাগুরুদের হাতে নিপীড়নের শিকার হয়ে এ দেশে আশ্রয় নিয়েছে বা নিতে চায়, তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। ওই বিলে কেন মুসলমানদের বাদ দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বৈষম্যের রাজনীতি করার অভিযোগে সরব হয় বিরোধী দলগুলি। দেশ জুড়ে শুরু হয় ওই আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন। যদিও ঘনিষ্ঠ মহলে বিজেপির বক্তব্য, ওই আইন কার্যকর হলে দলের সব থেকে বেশি ফায়দা হবে পশ্চিমবঙ্গে। এর ফলে কয়েক লক্ষ মতুয়া সমাজের মানুষ ভারতে নাগরিকত্ব পাবেন। তা হলে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ভোটব্যাঙ্কে এর সুফল পাবে বিজেপি।
কিন্তু সেই আইন পাশের পরে এক বছর কেটে গেলেও আইনের নিয়ম-বিধি তৈরি করতে ব্যর্থ সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের মতে, কোনও আইন পাশ হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে সেই আইনের নিয়ম-বিধি তৈরি করে ফেলতে হয়। সেটা করতে ব্যর্থ হলে বিধিনিষেধ সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির কাছে ছয় মাস সময় বাড়ানোর অনুরোধ করতে পারে সরকার। সেই মতো গত জুলাই মাসে ছয় মাসের সময়সীমা শেষ হয় সরকারের। নিয়ম মতো এর পরে আরও তিন মাসের অতিরিক্ত সময় চাওয়া সম্ভব। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, নভেম্বরে সেই সময় সীমাও পেরিয়ে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও এখনও বিধিনিয়ম তৈরি হয়নি। অথচ রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় পশ্চিমবঙ্গে প্রচারে গিয়ে দাবি করেছেন, আগামী মাস থেকে রাজ্যে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু নিয়ম-বিধি প্রণয়ন না হলে ওই আইন রূপায়ণ সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কোনও ভাবেই নাগরিকত্ব দেওয়া সম্ভব নয় কাউকে। কেন নিয়মবিধি তৈরি হয়নি সেই প্রশ্নে মুখে কুলুপ এঁটেছেন স্বরাষ্ট্র কর্তারা।