প্রতীকী ছবি।
গত ছ’মাস ধরে লাগাতার করোনা রোগীদের চিকিৎসা করতে করতে নানাবিধ মানসিক সমস্যা ও উদ্বেগে ভুগতে শুরু করেছেন চিকিৎসকদের একটি অংশ। সেই কারণে কোভিডের চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত চিকিৎসাকর্মীদের মানসিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে আলাদা নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। যা তৈরি করেছে বেঙ্গালুরুর ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টার হেলথ অ্যান্ড নিউরোসায়েন্সেস’ (নিমহ্যান্স)।
গোটা দেশে ইতিমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তেরোশোর কাছাকাছি চিকিৎসক। অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের ধরলে সংখ্যাটি অনায়াসে হাজার পাঁচেক ছাপিয়ে যাবে। গত কাল পর্যন্ত করোনা সংক্রমণে ৯৯ জন চিকিৎসক মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যসোসিয়েশন। মনোবিদেরা মনে করছেন, সতীর্থদের মৃত্যুর খবর গভীর প্রভাব ফেলছে চিকিৎসকদের মনে। কোভিডের চিকিৎসা করতে গিয়ে তাঁরাও ওই রোগের শিকার হয়ে পড়বেন এবং গোটা পরিবারের সংক্রমণের কারণ হবেন— অজান্তেই এই রকম ভয়ে ভুগছেন চিকিৎসকদের একাংশ। সংক্রমিত হলে তাঁরা নিজেরা কিংবা পরিবারের লোকেরা ঠিকমতো চিকিৎসা পাবেন কি না, নিভৃতবাস কেন্দ্রে জায়গা পাবেন কি না— চেপে বসছে এই সব চিন্তাও। চিন্তা রয়েছে কাজের জায়গা নিয়েও।
অবসাদে-দুশ্চিন্তায় কারও কারও মাঝেমধ্যেই কেঁদে ফেলার প্রবণতা (ক্রাইং স্পেল) লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকে সব সময়ে খারাপ কিছু ঘটে যাওয়ার চিন্তায় ভুগে চলেছেন। অনেকে আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিতেও পিছপা হচ্ছেন না। মনোবিদেরা দেখেছেন, ধারাবাহিক এমন উদ্বেগ প্রভাব ফেলছে রুটিন কাজেও। সাময়িক স্মৃতি হারিয়ে ফেলা, কাজের সময় অস্থিরতা, ধৈর্যের অভাব দেখা যাচ্ছে। পড়ছে কাজের মানও।
এর প্রতিকারে নয়া নির্দেশিকায় প্রতিটি কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্রে মনোবিদ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। দেশের প্রতিটি জেলায় হেল্পলাইন চালুর সুপারিশ করা হয়েছে। চিকিৎসকদের দলগত বৈঠকে নিয়মিত ভাবে মানসিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে।