প্রতীকী ছবি।
নোটবন্দির জেরে বেকারত্বের হার বেড়েছে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে মোদী সরকার তিন বছরের পরিসংখ্যান দিল ঠিকই। তবে একই সঙ্গে জানিয়ে দিল, নমুনা (স্যাম্পল) বাছাই এবং সমীক্ষার পদ্ধতি— দুটোই তাদের ক্ষেত্রে আলাদা! ফলে ২০১৩-১৪ কিংবা ২০১৫-১৬ সালের তুলনায় ২০১৭-১৮ সালে বেকারত্বের হার ঠিক কতটা বেশি, তার সঠিক তুলনা টানা ওই তথ্য থেকে শক্ত।
তবে ওই তথ্যেও স্পষ্ট যে, ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর নোট নাকচের পরে ২০১৭-১৮ সালে জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের (এনএসও) করা সমীক্ষা অনুযায়ী, সারা দেশে গড় বেকারত্বের যা হার (৬%), তার তুলনায় সেই হার অনেক বেশি উত্তর-পূর্বের অনেক রাজ্যে। নাগাল্যান্ড (২১.৪%), মণিপুর (১১.৫%), মিজোরাম (১০.১%) এ বিষয়ে প্রথম সারিতে। গড় বেকারত্ব বেশি পূর্বের অসম (৭.৯%), বিহার (৭%), ওড়িশা (৭.১%), ঝাড়খণ্ডেও (৭.৫%)। এরই মধ্যে তৃণমূলের দাবি, মোদী সরকার যতই পশ্চিমবঙ্গে চাকরি না-থাকার অভিযোগ তুলুক, এই পরিসংখ্যানেই দেখা যাচ্ছে যে, রাজ্যে বেকারত্বের হার (৪.৬%) জাতীয় গড়ের থেকে কম।
নোট বাতিলের পরে দেশে বেকারত্বের হার বেড়েছে কি না, রাজ্যসভায় সেই পরিসংখ্যান চেয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ মানস ভুঁইয়া। গত তিন বছরের বেকারত্বের পরিসংখ্যানের পাশাপাশি কোন রাজ্য ওই নিরিখে কোথায় দাঁড়িয়ে, সেই তথ্যও কেন্দ্রের কাছে চেয়েছিলেন তিনি। জবাবে ২০১৩-১৪, ২০১৫-১৬ এবং ২০১৭-১৮ সালের পরিসংখ্যান দেন শ্রম এবং কর্মসংস্থান মন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ার।
ওই তথ্যে চোখ রাখলে স্পষ্ট যে, অধিকাংশ রাজ্যেই বেকারত্বের হার প্রথম দুই বছরের তুলনায় ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে বেশি। সারা দেশেও ওই হার যথাক্রমে ৩.৪%, ৩.৭% এবং ৬%। কিন্তু সেখানেই সরকার জানিয়েছে, প্রথম দুই সমীক্ষা যেখানে শ্রম বুরোর করা, সেখানে ২০১৭-১৮ সালের সংখ্যা মিলেছে জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের (এনএসও) সমীক্ষার ভিত্তিতে। যাদের নমুনা বাছাই এবং সমীক্ষার পদ্ধতি আলাদা। অর্থাৎ, তুলনা করা যুক্তিযুক্ত নয়।
তবে দেশে কাজের সুযোগ বাড়াতে মন্ত্রী যে সমস্ত পদক্ষেপ করার কথা বলেছেন, তার মধ্যে রয়েছে একশো দিনের কাজের প্রকল্পও। ক্ষমতায় আসার পরে যাকে ইউপিএ জমানার ব্যর্থতার জ্বলন্ত উদাহরণ বলে বিঁধতে ছাড়েননি খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।