ছবি পিটিআই।
মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পরে দেশে থাকা, পর্যটন ভিসায় এসে ধর্মপ্রচার করা, করোনা সংক্রান্ত নিয়মবিধি ভাঙার মতো একাধিক অভিযোগে ৪০টি দেশের ২,৫৫০ তবিলিগি জামাত সদস্যকে কালো তালিকাভুক্ত করল কেন্দ্র। ওই ব্যক্তিরা আগামী দশ বছর ভারতে প্রবেশ করতে পারবেন না। ভারতে প্রবেশের ক্ষেত্রে এক ধাক্কায় এত জনকে কালো তালিকাভুক্ত করার নজির সম্ভবত এই প্রথম বলেই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আগামী দিনে তবলিগি জামাতের কর্মকাণ্ডে যোগ দিতে আসা কোনও ব্যক্তিকে ভিসা দেওয়া হবে না বলেও নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।
লকডাউনের প্রথম পর্বে দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকার একটি মসজিদে করোনা সংক্রান্ত স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করে প্রায় দু’হাজারের বেশি তবলিগি জামাত সদস্য বাস করছেন বলে জানা যায়। বিষয়টি সামনে এলে পুলিশের হস্তক্ষেপে ওই ব্যক্তিদের করোনা পরীক্ষা করে হাসপাতাল ও নিভৃতবাসে পাঠায় স্বাস্থ্য দফতর। তখনই ওই জামাত সদস্যদের মধ্যে দু’শোরও বেশি বিদেশি সদস্যকে চিহ্নিত করে দিল্লি পুলিশ। পরে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে তল্লাশি শুরু হলে প্রায় ৪০টি দেশের জামাত সদস্য ধরা পড়েন। বিদেশ থেকে ভারতে ধর্মপ্রচার করতে এসে তাঁরা লকডাউন শুরু হওয়ায় আটকে পড়়েছিলেন।
আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, বিভিন্ন রাজ্য থেকে প্রায় ২৫৫০ জন বিদেশি জামাত সদস্যের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। তাঁরা ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও রয়ে গিয়েছিলেন। ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পর্যটন ভিসায় এসে ধর্মপ্রচারের অভিযোগও আনে রাজ্যগুলি। আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, রাজ্যগুলির কাছ থেকে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই বিদেশি জামাত সদস্যদের কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ওই ব্যক্তিরা আগামী দশ বছর ভারতে প্রবেশ করতে পারবেন না।
বিভিন্ন রাজ্যে তবলিগের যে বিদেশি প্রতিনিধিরা রয়েছেন, তাঁদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াও চলছে। পশ্চিমবঙ্গে তবলিগি জামাতের ১০৮ জন বিদেশি প্রতিনিধি ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ২৪ জনকে রাজ্য সরকার গয়া পাঠিয়েছিল। সেখান থেকে তাঁদের দিল্লি পাঠানো হয়েছে। ১৯ জন বাংলাদেশি প্রতিনিধিকে পেট্রাপোল হয়ে গত ৩০ মে সে দেশে পাঠাতে চেয়েছিল সরকার। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘বিদেশ মন্ত্রক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমোদনক্রমেই বাংলাদেশিদের সে দেশে পাঠানো হচ্ছিল। ৩১ মে কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, তাঁদের দিল্লি হয়ে পাঠাতে হবে। এখন রাজ্যে ৮৪ জন বিদেশি তবলিগি প্রতিনিধি রয়েছেন। তাঁদের দেশে পাঠানোর জন্য দিল্লির নির্দেশের প্রতীক্ষা করা হচ্ছে।’’ স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘‘১০৮ জন বিদেশি প্রতিনিধিরই করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। প্রত্যেকের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। কারও বিরুদ্ধে কোনও অপরাধমূলক কাজকর্মের খবর মেলেনি। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের অবস্থান স্পষ্ট এবং স্বচ্ছ।’’