বার্জার পেইন্টসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার অভিজিৎ রায়
বাড়ি মানেই স্বপ্নপুরী। যে স্বপ্নপুরীতে খুঁজে পাওয়া যায় নিজের অন্তরাত্মাকে। সারাদিনের ব্যস্ততার শেষে ক্লান্তি ঘোচাতে আমরা আশ্রয় নিয়ে থাকি ঘরে। ঠিক যেমন করে, বেলা পোহালে, পাখিরা নীড়ে ফিরে যায়, ঠিক তেমন ভাবেই আমরাও ফিরে আসি আপন আলয়ে। তাই বাড়ির অন্দরমহল সাজিয়ে তোলা কোনও স্বপ্ন সত্যি করার থেকে কম কিছু নয়। আর গৃহ সজ্জার ক্ষেত্রে অন্যতম বড় ভূমিকা থাকে রঙের। বিগত কয়েক দশক ধরে লক্ষ লক্ষ মানুষের সেই স্বপ্নপুরীকে রঙিন করে সাজিয়ে তুলেছে বার্জার পেইন্টস। এবং সেই স্বপ্ন সত্যি করার কারিগর আর কেউ নন, সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও অভিজিৎ রায়।
দীর্ঘ ২৫ বছরের যাত্রা। কত চড়াই-উতরাই, কত কঠিন মঞ্চ। কখনও বা সাবাশি! কখনও দক্ষ হাতে দল পরিচালনা! সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত! আরও কত কী! অভিজিৎ রায়ের হাত ধরেই বার্জার পেইন্টস ইন্ডিয়া লিখেছে শত-শত সাফল্যের খতিয়ান। যদিও সেই পথ যে খুব সহজ ছিল তা নয়। জীবনের প্রায় অর্ধেক সময় তিনি কাটিয়ে দিয়েছেন বার্জার পেইন্টসের সঙ্গে। কখনও সাধারণ কর্মচারী হিসেবে, কখনও বা সেনাপতির ভূমিকায় সঠিক দিশা দেখিয়েছেন সংস্থাকে। সেই কারণেই বিগত আড়াই দশকেরও বেশি সময় ধরে, তাঁর উপরেই আস্থা রেখেছে বার্জার পেইন্টস।
অভিজিৎ রায়ের পথ চলা ঠিক যেন অনেকটা রূপকথার গল্পের মতো। বহু সাধনার পরেই কোনও একক ব্যক্তি এমন সাফল্যের জয়-গাঁথা লিখতে পারেন। ১৯৯৬ সালে কালার ব্যাঙ্কের প্রোডাক্ট ম্যানেজার হিসেবে তিনি বার্জার পেইন্টসের সঙ্গে যুক্ত হন। ২০০৪ সালে মার্কেটিং বিভাগের জেনারেল ম্যানেজারের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। ২০০৮ সালে বার্জার পেইন্টসের সেলস ও মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান তিনি। সময় এগোতে থাকে। একের পর এক গুরুদায়িত্বের ভার এসে পড়ে তাঁর কাঁধে। দক্ষতার সঙ্গে প্রতিটি দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০১১ সালে চিফ অপারেটিং অফিসার এবং ডিরেক্টরের পদ দেওয়া হয় তাঁকে। ২০১২ থেকে বার্জার পেইন্টসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার তিনি। তাঁর বিচক্ষণতায় ভর করেই আজ বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে বার্জার পেইন্টস।
এই আড়াই দশকের কর্মজীবনে তিনি বার্জার পেইন্টসকে এনে দিয়েছেন একের পর এক নজরকাড়া সাফল্য। পরিসংখ্যান বলছে, তাঁর হাত ধরেই বার্জার পেইন্টসের বার্ষিক বৃদ্ধির হার হয়েছে গড়ে ১৪ শতাংশ। বাজারে ক্যাপিটালের বৃদ্ধি হয়েছে ২৫০০ গুণ। বর্তমানে বার্জার পেইন্টস ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম রঙ প্রস্তুতকারক সংস্থা। বিশ্বের অন্যান্য রঙ প্রস্তুতকারক সংস্থার নিরিখেও বেশ এগিয়ে রয়েছে বার্জার। বর্তমানে তারা বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম ডেকোরেটিভ রঙ প্রস্তুতকারক সংস্থা। এছাড়াও অভিজিৎ রায়ের উদ্যোগেই সংস্থা একের পর এক উদ্ভাবনী পণ্য ও পরিকল্পনা বাজারে নিয়ে এসেছে। যা বার বার বার্জার পেইন্টসের শিরোপায় যোগ করেছে নতুন পালক।
বার্জার যখন পথ চলা শুরু করেছিল, তখন হাওড়াতেই তাদের একটিমাত্র কারখানা ছিল। রঙ উৎপাদন থেকে শুরু করে, প্যাকিং সবটাই হতো সেখানে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংস্থার ব্যপ্তিও বাড়তে থাকে। বর্তমানে বার্জার পেইন্টসের ২৭টি কারখানা রয়েছে, যেখানে বিশ্বমানের রঙ উৎপাদন হয়। এর মধ্যে ৯টি কারখানা যৌথ উদ্যোগে তৈরি। পাশাপাশি, বার্জার পেইন্টসই প্রথম সংস্থা, যারা বাজারে এমন ‘ওয়াশেবল রঙ’ নিয়ে আসে, অর্থাৎ যা সহজেই ধোয়া যায়।
বলা হয় ‘সময় পেরিয়ে যায় সময়ের মতো করে। কিন্তু সেই সময়কে সাক্ষী রেখে যে বা যারা মাথা উঁচু করে টিকে থাকতে পারে, তারাই হয় রাজা।’ দীর্ঘ আড়াই দশকে বার্জার পেইন্টসকে টেক্কা দিতে বাজারে এসেছে একের পর এক রঙ প্রস্তুতকারক সংস্থা। প্রতিস্পর্ধাও বেড়েছে। অথচ অভিজিৎ রায়ের সুদক্ষ নেতৃত্বে সংস্থার সাফল্য হয়েছে গগনচুম্বী। অভিজিৎ রায়ের গর্বে আজ গর্বিত বাঙালি। বিশ্বের দরবারে বাঙালির নাম উজ্জ্বল করেছেন তিনি। তবে এখানেই শেষ নয়। আরও অনেকটা পথ চলা বাকি। সেই পথে অধিনায়কের পথনির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছে কর্মীরা। সেই পথেই আরও কিছু ম্যাজিক দেখার অপেক্ষায় রয়েছে আমজনতা।
এই প্রতিবেদনটি ‘বার্জার পেইন্টস’-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।