জেএনইউ ক্যাম্পাসে মুখোশধারীদের ভাঙচুর। —ফাইল চিত্র
এ যেন ছিল রুমাল, হয়ে গেল বিড়াল! জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটির (জেএনইউ) যে সার্ভার রুমে ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে হইচই, পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের, তা নাকি বাস্তবে ঘটেইনি! একটি আরটিআই-এর উত্তরে বুধবার এমনটাই জানিয়ে দিয়েছেন সেই জেএনইউ কর্তৃপক্ষই।
গত ৫ জানুয়ারি জেএনইউ-তে হামলায় জখম ঐশী ঘোষ-সহ কয়েক জনকে যখন হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে ঠিক তখনই পুলিশে দু’টি এফআইআর দায়ের করা হয়। তার মধ্যে একটি ছিল সার্ভার রুমে হামলা নিয়ে। তার পরই আরটিআই করেন এক সমাজকর্মী। তার উত্তরে জেএনইউ কর্তৃপক্ষই এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন, গত ৩ জানুয়ারি সেন্টার ফর ইনফর্মেশন সিস্টেম (সিআইএস)-এ থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সার্ভার বন্ধ ছিল। তা পরের দিন পর্যন্ত কাজ করেনি ‘বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা থাকার জন্য।’
অথচ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে দায়ের করা এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে, এক দল পড়ুয়া কাচের দরজা ভেঙে সিআইএস অফিসে ঢোকে। তারা সার্ভারের ক্ষতি করে। তার ফলে, সার্ভার বিকল হয়ে পড়ে। এ ছাড়া ওই হামলার জেরে অপটিক কেবল ও বায়োমেট্রিক সিস্টেমেরও ক্ষতি হয়।
আরও পড়ুন: চাকরি না পাওয়ার হতাশায় বিমানবন্দরে বোমা! ম্যাঙ্গালুরুর ঘটনায় নয়া মোড়
আরটিআই-এর উত্তরে আরও বলা হয়েছে, ৫ জানুয়ারি বিকেল ৩টে থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেটের সিসিটিভির নিরবচ্ছিন্ন ফুটেজ পাওয়া সম্ভব নয়। অথচ, ঠিক ওই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই মুখোশধারীদের আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন জেএনইউ-র পড়ুয়া ও অধ্যাপকেরা। গুরুতর জখম হন এসএফআই নেত্রী তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ-সহ অনেকেই। ঐশী ঘোষদের বিরুদ্ধে জেএনইউ কর্তৃপক্ষ যে অভিযোগ তুলে পুলিশে এফআইআর দায়ের করেছিলেন তার সঙ্গে আরটিআইয়ের উত্তরের আসমান জমিন ফারাক ধরা পড়েছে এ দিন। জেএনইউ-তে হামলার পরে সপ্তাহ দু’য়েকের বেশি পেরিয়ে গেলেও বিতর্কের আঁচ এখনও গনগনে। আরটিআইয়ের এই উত্তর তাতে নতুন করে ইন্ধন জোগাল বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সিএএ-তে স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট, গঠিত হবে সাংবিধানিক বেঞ্চ
আরটিআইয়ের উত্তরের পরে জেএনইউ বিতর্ক যখন ফের ঘনিয়ে উঠেছে তখন কর্তৃপক্ষ অবশ্য সেই পুরনো তত্ত্বই খাড়া করেছেন। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গত ৩ জানুয়ারি ঘটনাপ্রবাহ যে ভাবে ঘটেছে সে ভাবেই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এফআইআরে যা বলা হয়েছে তার সঙ্গে আসল ঘটনার কোনও ফারাক নেই।’ আরটিআইয়ের উত্তর নিয়ে জেএনইউ কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা, ৩ জানুয়ারি, সিআইএস ডেটা সেন্টারের ঘটনা নিয়ে যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল তাতে ওই দিন সার্ভারে ভাঙচুর হয়েছে বলে দাবি করা হয়নি। জেএনইউ-র দাবি, আরটিআইয়ের উত্তর ঠিক এবং নির্দিষ্ট যে প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছিল, তারই উত্তর দেওয়া হয়েছে।