ফের হবে অর্থনীতির পরীক্ষা, তবে অঙ্ক অনিশ্চিত

টুইটারে তিনি ঘোষণা করে দিলেন, সিবিএসই-র দশম শ্রেণির অঙ্ক পরীক্ষা সারা দেশে নতুন করে নেওয়া হবে না। একাধিক বার বললেন, পুলিশি তদন্তে যদি দেখা যায় বড় ধরনের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে, তা হলেই ফের পরীক্ষা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৮ ০৪:০২
Share:

আন্দোলন: নিশানায় সিবিএসই। প্রশ্ন ফাঁসের জেরে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের। শুক্রবার যন্তরমন্তরে।

টুইটারে তিনি ঘোষণা করে দিলেন, সিবিএসই-র দশম শ্রেণির অঙ্ক পরীক্ষা সারা দেশে নতুন করে নেওয়া হবে না। একাধিক বার বললেন, পুলিশি তদন্তে যদি দেখা যায় বড় ধরনের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে, তা হলেই ফের পরীক্ষা হবে। সেটাও হবে জুলাই মাসে, শুধুমাত্র দিল্লি ও হরিয়ানায়। শুধু তা-ই নয়, প্রশ্ন ফাঁস রোখার দায়িত্বটাও ছাত্রদের ঘাড়ে ঠেলে দিলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর।

Advertisement

কেন্দ্রীয় শিক্ষাসচিব অনিল স্বরূপ আগেই জানিয়েছিলেন, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির প্রশ্ন ফাঁস হলেও আপাতত আগামী ২৫ এপ্রিল গোটা দেশে শুধুমাত্র দ্বাদশ শ্রেণির অর্থনীতির পরীক্ষাই নতুন করে নেওয়া হবে। কিন্তু শুধু দিল্লি-হরিয়ানা কেন? শিক্ষাসচিবের যুক্তি, ‘‘প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, দশম শ্রেণির অঙ্ক প্রশ্ন ফাঁস হওয়াটা দিল্লি-সহ রাজধানী এলাকা এবং হরিয়ানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তাই যদি পরীক্ষা হয়, ওই দু’টি রাজ্যেই হবে।’’

মন্ত্রী-সচিবের এই ঘোষণার পরেই সমালোচনার ঝড় ওঠে দেশজুড়ে। আজ প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডে ঝাড়খণ্ডের চাতরায় আটক করা হয়েছে ছ’জনকে। তাঁরা একটি কোচিং সেন্টার চালাতেন। অভিযোগ, দিল্লি থেকে হোয়াট্সঅ্যাপে অঙ্কের প্রশ্নপত্র পেয়েছিলেন এঁরা। পটনা থেকেও দু’জনকে চাতরায় এনে জেরা করা হচ্ছে। তা হলে কেন্দ্র কী করে শুধু দিল্লি-হরিয়ানার কথা বলছে, সেই প্রশ্ন তোলেন অনেকে। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নির্দিষ্ট সময় পার করে জুলাই পর্যন্ত পরীক্ষা টেনে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও অসন্তোষের মুখে পড়ে।

Advertisement

কেন্দ্রের এক সূত্রের অবশ্য দাবি, দিল্লি-হরিয়ানায় সিবিএসই-র ছাত্রছাত্রীরা সচরাচর নিজেদের স্কুলেই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন। ফলে তাঁদের ক্লাস শুরু করে দেওয়া হবে। অঙ্ক পরীক্ষা সময়মতো নেওয়া হবে। ছ’টির মধ্যে সেরা পাঁচটি বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে একাদশে ভর্তির সুযোগ থাকায় তাঁরা সমস্যায় পড়বেন না বলে সূত্রটির দাবি।

বিচার চেয়ে পথে। রাজধানীতে শুক্রবার।

যদিও এর পরেও প্রশ্ন থাকছে। মন্ত্রীর ব্যাখ্যার অর্থ দাঁড়ায়, কলকাতার কোনও ছাত্র যদি দিল্লিতে একাদশ-দ্বাদশে পড়তে যান, তাঁর অঙ্ক পরীক্ষা ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। অথচ উচ্চমাধ্যমিকে তাঁর সহপাঠীদের ফের পরীক্ষা দিতে হতে পারে। যে সম্ভাবনার কথা ভেবে বিস্মিত কেউ কেউ। জাভড়েকর যদিও রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ আবার টুইট করেছেন, ‘‘১৬ লক্ষের মধ্যে ১৪ লক্ষ ছাত্রছাত্রীকে অঙ্কের পরীক্ষা দিতে হবে না। এটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।’’

শিক্ষাসচিব আজ বলেন, ‘‘দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপার থাকে। তাই ওদের বিষয়ে আগে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ কিন্তু শুধু দিল্লি-হরিয়ানায় নতুন করে অঙ্ক পরীক্ষা হওয়াটা কি বৈষম্য নয়? প্রশ্ন শুনে তাঁর জবাব, ‘‘জানি এটা নিখুঁত সমাধানসূত্র নয়। কিন্তু হাতে যা তথ্য রয়েছে, তার ভিত্তিতে এটাই হয়তো সবচেয়ে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত।’’ ভবিষ্যতে প্রশ্ন ফাঁস আটকানোর কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি শিক্ষাসচিব। তবে জাভড়েকর আজ দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘‘প্রশ্ন ফাঁস আটকানোর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছি। সেটা ছাত্রদেরও ছুড়ে দিলাম। সবাই ভেবেচিন্তে বলুক, কী করা যায়!’’

পুলিশ সূত্রের খবর, প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত অন্তত ৬০ জনকে জেরা করা হয়েছে। যে দশটি হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে প্রশ্ন ছড়িয়েছিল, তাদের অ্যাডমিন ছাড়াও ১৮ জন ছাত্র, বেশ কিছু অভিভাবক, কোচিং সেন্টারের মালিক এবং শিক্ষক এই তালিকায় রয়েছেন।

ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement