CBI

CBI: লাইসেন্স-চক্রের খোঁজ করতে কাশ্মীরে হানা দিল সিবিআই দল

শাহিদ ইকবাল চৌধরি এখন জম্মু-কাশ্মীরের আদিবাসী বিষয়ক সচিব এবং ‘মিশন ইউথ’-এর সিইও পদে রয়েছেন। এক সময়ে কাঠুয়া, রিয়াসি, রাজৌরি এবং উধমপুরের ডেপুটি কমিশনার হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২১ ০৭:৫২
Share:

প্রতীকী চিত্র।

আড়াই লক্ষেরও বেশি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল বেআইনি ভাবে। এই অভিযোগের তদন্তের সূত্রে জম্মু-কাশ্মীর এবং নয়াদিল্লি মিলিয়ে অন্তত ৪০টি জায়গায় আজ তল্লাশি চালাল সিবিআই। তল্লাশি হয়েছে কাশ্মীরের সিনিয়র আইএএস অফিসার শাহিদ ইকবাল চৌধরির সরকারি বাসভবনেও। সিবিআই সূত্রের বক্তব্য, বেআইনি লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়াও শাহিদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

জম্মুর পাশাপাশি কাশ্মীরের শ্রীনগর, উধমপুর, রাজৌরি, অনন্তনাগ এবং বারামুলাতে আজ তল্লাশি চালায় সিবিআই। বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০১২ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে এই বিপুল সংখ্যক বেআইনি লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওই সময়ে জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসকের মতো পদে ছিলেন, এমন বিশেষ কয়েক জন আইএএস এবং কাশ্মীর প্রশাসনের (কেএএস) কর্তাদের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি হয়েছে। অন্তত ২০টি বন্দুকের দোকানেও চলেছে তল্লাশি। সিবিআইয়ের বক্তব্য, ‘‘দেখা যাচ্ছে, যাঁদের অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ারই কথা নয়, জম্মু-কাশ্মীরের ২২টিরও বেশি জেলায় এমন লোকেদের অন্তত ২.৭৮ লক্ষ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্তে নির্দিষ্ট কিছু অস্ত্র ব্যবসায়ীর ভূমিকা চোখে পড়েছে, যাঁরা সংশ্লিষ্ট জেলার ডিএম বা এডিএমের মতো সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে যোগসাজশে এ ভাবে লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতেন।’’

শাহিদ ইকবাল চৌধরি এখন জম্মু-কাশ্মীরের আদিবাসী বিষয়ক সচিব এবং ‘মিশন ইউথ’-এর সিইও পদে রয়েছেন। এক সময়ে কাঠুয়া, রিয়াসি, রাজৌরি এবং উধমপুরের ডেপুটি কমিশনার হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। অভিযোগ, ওই সমস্ত জেলায় তাঁর কার্যকালেই ভুয়ো নামে হাজার হাজার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। শুধু তৎকালীন জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যে নয়, অন্যান্য রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছিল ভুয়ো লাইসেন্স।

Advertisement

শাহিদ পরে টুইটারে লেখেন, ‘‘সিবিআই আমার বাড়ি তল্লাশি করে অভিযোগ তোলার মতো কিছু পায়নি। আমি আমার কার্যকালের জন্য সিবিআইয়ের কাছে জবাবদিহি করতে প্রস্তুত।’’ তাঁর দাবি, ২০১২ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে জম্মু-কাশ্মীরে মোট ৪.৪৯ লক্ষ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে রিয়াসি, কাঠুয়া এবং উধমপুরে দেওয়া হয়েছিল ৫৬ হাজার। ওই তিন জেলায় তাঁর কার্যকালে দেওয়া হয়েছিল মাত্র ১৭২০টি লাইসেন্স। যা জম্মু-কাশ্মীরে ওই চার বছরে ইসু হওয়া মোট লাইসেন্সের ০.৩৮ শতাংশও নয়।

সিবিআই যদিও মনে করছে, চক্রের শিকড় অনেক গভীরে। আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের এত বড় চক্রের খোঁজ এর আগে ভারতে মেলেনি বলেই অনেকের মত। ২০১৭ সালে রাজস্থান পুলিশের এটিএস ভুয়ো লাইসেন্সের এই চক্রের হদিস পায়। আইএএস অফিসার রাজীব রঞ্জনের ভাই-সহ অস্ত্র ব্যবসার একাধিক দালালকে গ্রেফতার করেছিল তারা। জম্মু-কাশ্মীরের অফিসারদের জোগসাজশের ইঙ্গিত মেলায় তৎকালীন রাজ্যপাল এন এন ভোরা এই তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। রাজীব রঞ্জন-সহ দুই অফিসারকে গত বছর গ্রেফতার করেছিল সিবিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement