অখিলেশ যাদব ও মায়াবতী। ফাইল চিত্র
যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য জমি কেনায় বড়সড় অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিল যোগী আদিত্যনাথের সরকার। সিবিআই এ বার সেই অভিযোগের তদন্ত ভার হাতে নিল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির এক অধিকর্তা বুধবার জানিয়েছেন, এ বিষয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের করা এফআইআর ধরেই এগোবে সিবিআই। এই এফআইআর-এ ‘যমুনা এক্সপ্রেসওয়ের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (ইয়েইডা)-র সিইও পি সি গুপ্ত-সহ ২১ জনের নাম রয়েছে। তবে রাজনৈতিক মহল নিশ্চিত যে সিবিআইয়ের এই তদন্তের আসল লক্ষ্য রাজ্যের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী এবং অখিলেশ যাদবকে চাপে রাখা।
নয়ডা ও আগরার মধ্যে সংযোগকারী ১৬৫ কিলোমিটার সড়কটির কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৯-এ মায়াবতীর আমলে। ২০১২-য় অখিলেশ যাদব মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সেটির উদ্বোধন করেন। এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ফলে উত্তরপ্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় সড়ক পরিবহণের ছবিটিই বদলে গিয়েছে। কিন্তু জমি অধিগ্রহণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে ইয়েইডা-র অডিটে। সেই অনিয়মের তদন্তের পরে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ২০১৮-র জুনে ওই এফআইআর-টি করেছিল। তাতে অভিযোগ করা হয়, ইয়েইডা-র সিইও পি সি গুপ্ত ও কয়েক জন কর্মী মথুরার কাছে ৭টি গ্রামের কৃষকদের কাছ থেকে ৫৭.১৫ হেক্টর জমি কম দামে কিনে রাখে। চার পাঁচ মাস পরে সে জমি তারা অনেক বেশি দামে ইয়েইডা-কে বিক্রি করে। সংস্থার অভ্যন্তরীণ হিসেবে দাবি করা হয়েছে, এর ফলে ইয়েইডা-র ১২৬ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। মায়াবতীর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই তাজ করিডর মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। জমি অধিগ্রহণে অনিয়মের অভিযোগেই এই মামলা চলেছে। তাজ এক্সপ্রেসওয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট অথরিটিই পরে নাম বদলে ইয়েইডা হয়। সময়ে টাকা না-দেওয়ায় গত সপ্তাহেই জেপি গোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ ১০০০ হেক্টর জমি ফিরিয়ে নিয়েছে ইয়েইডা।
এক্সপ্রেসওয়ে কেলেঙ্কারি কী
• ২০০৯ সালে, মায়াবতীর জমানায় গ্রেটার নয়ডা থেকে আগরা পর্যন্ত ১৬৫ কিলোমিটার ছ’লেনের এক্সপ্রেসওয়ে তৈরির সিদ্ধান্ত
• ২০১২ সালের ৯ অগস্ট খুলে দেওয়া হয় এক্সপ্রেসওয়ে। উত্তরপ্রদেশে তখন অখিলেশ যাদবের সরকার
• ২ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ করে এক্সপ্রেসওয়ে তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণে দুর্নীতির অভিযোগ
• ২০১৭ সালে তদন্ত শুরু করেন যোগী আদিত্যনাথ
• বিভাগীয় তদন্তের পর অভিযোগ ওঠে, ওয়াইইআইডিএ-র প্রাক্তন সিইও পি সি গুপ্ত এবং সংস্থার আরও ১৯ জন কর্মী মিলে মথুরার সাতটি গ্রামের ৫৭.১৫ একর জমি কিনেছিলেন, ১৯টি সংস্থার নামে
• ৫৭.১৫ একর জমি কিনতে খরচ হয়েছিল ৮৫.৪৯ কোটি টাকা
• প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, এক্সপ্রেসওয়ে তৈরির জন্য ওই জমি সরকার কিনেছিল অনেক বেশি দামে। সরকারি তহবিল থেকে ১২৬ কোটি টাকা বেশি খরচ। জমির আদি মালিকদের কাছ থেকে জমি কিনলে এত খরচ হত না
• ২০১৮ সালের জুনে এফআইআর দায়ের। সিবিআই-কে তদন্তের সুপারিশ যোগী সরকারের