ডি কে শিবকুমার। ছবি: সংগৃহীত।
বিধায়ক কিনে কমলনাথের কংগ্রেস সরকার ফেলে মধ্যপ্রদেশে বিজেপি সরকার গঠনের ক্ষেত্রে সব চেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তৎকালীন মন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা ডি কে শিবকুমার। শেষ পর্যন্ত সে কাজে সফল হয় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কমলনাথ সরকার সংখ্যালঘু হয়ে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়। তার পরেও শিবকুমারকে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি করে পুরস্কৃত করেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। ৩ নভেম্বর মধ্যপ্রদেশে বেশ কয়েকটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। তার আগেই শিবকুমারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ নয়ছয়ের মামলা দায়ের করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। সোমবার দিনভর কর্নাটক, দিল্লি ও মুম্বইয়ে শিবকুমার ও তাঁর আত্মীয়স্বজনদের ১৪টি বাড়িতে তল্লাশি করল সিবিআই। দিনের শেষে কংগ্রেস সভাপতি ও আত্মীয়দের বিরুদ্ধে ৭৫ কোটি টাকার আয় বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগ এনে নতুন মামলা করল কেন্দ্রীয় এই সংস্থা। দাবি করল, তল্লাশিতে নগদ ৫৭ লক্ষ টাকা এবং বহু বেআইনি সম্পত্তির কাগজপত্র মিলেছে।
কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, উপনির্বাচনের আগে ‘খাঁচার তোতাপাখি’ সিবিআইকে ছেড়ে শিবকুমারকে দমাতে এবং তাঁদের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে নেমেছে বিজেপি। বিহারেও তারা একই পদক্ষেপ করেছে, কর্নাটকেই বা পিছিয়ে থাকে কেন। বিজেপি সেই অভিযোগ উড়িয়ে বলছে, শিবকুমারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়। ২০১৭-এ তাঁর বিরুদ্ধে ৮.৬ কোটি টাকা কর ফাঁকির অভিযোগ এনে মামলা করেছিল আয়কর দফতর। তদন্তের পরে দেখা যায়, অঙ্কটি ১১ কোটি। এর পরে দুর্নীতির অন্য অভিযোগেও মামলা হয়েছে, শিবকুমারকে জেলেও
যেতে হয়েছে সে জন্য। এমন এক জনকে প্রদেশ সভাপতি করে কংগ্রেস বুঝিয়ে দিয়েছে, তারা দুর্নীতিকেই প্রশ্রয় দিচ্ছে। ভোটের আগে এই তরজা জমে উঠেছে।শিবকুমারের আইনজীবী এ এস পোন্নানার অভিযোগ, প্রতিবার কর্নাটকে নির্বাচন এলেই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি তাঁর মক্কেলের বাড়িতে তল্লাশিতে নামে। এ বারেও সিবিআই সেই কাজ করেছে। পোন্নানা বলেন, ‘‘প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে শিবকুমারের জনপ্রিয়তাকে বিজেপি ভয় পায়। এ বারও তিনি স্টার ক্যাম্পেনার। বিজেপি ভাবছে, এ ভাবে তাঁকে দমাবে। কিন্তু কর্নাটকের মানুষ জানেন, কেন তাঁর বাড়িতে তল্লাশি হয়।” কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার টুইট— ‘মোদী ও ইয়েদুরাপ্পা সরকার এবং বিজেপির শাখা হল সিবিআই, ইডি ও আয়কর দফতর। এ ভাবে কংগ্রেসকে দমানো যায় না।’ কর্নাটকের বিজেপি শাখা পাল্টা টুইটে বলছে, ‘২০১৪ ও ২০১৯-এ কোনও কংগ্রেস নেতার বাড়িতেসিবিআই তল্লাশি হয়নি। কংগ্রেস কিন্তু হেরেছে। এ বারও হারবে। তার পরে অজুহাত দেবে এই তল্লাশির।’