দিল্লির আম আদমি পার্টির (আপ) সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। ফাইল চিত্র।
দিল্লির আম আদমি পার্টির (আপ) সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়ার বিরুদ্ধে নতুন এফআইআর রুজু করল সিবিআই। আবগারি দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হয়ে এখন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির হেফাজতে রয়েছেন মণীশ। এ বার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ‘রাজনৈতিক স্বার্থে’ গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার এবং সেই সূত্রে সরকারি তহবিল নয়ছয়ের। নতুন এফআইআরের পরে ফের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের টুইট, ‘দেশের জন্য এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা’।
২০১৫ সালে দিল্লির মন্ত্রী পরিষদের অনুমোদন নিয়ে ফিডব্যাক ইউনিট বা এফবিইউ-কে সরকারি বিভাগ, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা প্রভৃতির কাজের ব্যাপারে ‘প্রাসঙ্গিক তথ্য ও প্রতিক্রিয়া’ সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অভিযোগ, সেটি নিয়ম মেনে তৈরি হয়নি। আর ভিজিল্যান্স দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী সিসৌদিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আপের বিরোধী নেতৃত্ব, আমলা এবং বিচারবিভাগের উপরে অবৈধ নজরদারি চালানোর জন্য বিশেষ ভাতা বাবদ সরকারি কোষাগার থেকে প্রায় ৩৬ লক্ষ টাকা অপব্যবহারের। দাবি করা হয়েছে, এফবিইউ-এর প্রতিবেদনের ষাট শতাংশ ভিজিল্যান্স বিভাগের সঙ্গে সম্পর্কিত। বাকি চল্লিশ শতাংশ রাজনীতি সংক্রান্ত।
গত ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে সিসৌদিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি দেয়। এফবিইউ মামলার এফআইআরে তিনি ছাড়াও নাম রয়েছে তৎকালীন ভিজিল্যান্স সচিব সুকেশকুমার জৈন, কেজরীওয়ালের বিশেষ উপদেষ্টা এবং ফিডব্যাক ইউনিটের যুগ্ম পরিচালক রাকেশ কুমার সিংহ, ওই ইউনিটের ডেপুটি ডিরেক্টর প্রদীপকুমার পুঞ্জ, ফিডব্যাক অফিসার সতীশ ক্ষেত্রপাল এবং কেজরীওয়ালের দুর্নীতিবিরোধী উপদেষ্টা গোপাল মোহনের। তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইন এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, জালিয়াতি-সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
এ দিন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরীওয়াল টুইটে অভিযোগ করেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ছকটাই হল, মণীশের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মিথ্যা মামলা ঠুকে দীর্ঘ সময়ের জন্য তাঁকে হেফাজতে রাখা।’ বিজেপির তরফে সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে কেজরীওয়ালের বিরুদ্ধেও মামলা করার দাবি তোলা হয়েছে। দিল্লি বিজেপির কার্যনির্বাহী সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেব এটি ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ বলে অভিহিত করে বলেছেন, এফবিইউ বিদেশি তহবিল পেয়েছে কি-না সেটাও তদন্ত করে দেখা দরকার। পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে কংগ্রেসের তরফে। দলের দিল্লির সহ-সভাপতি আলি মেহেন্দি বলেছেন, ‘‘আমরা মনে করি, এই মামলায় ইউএপিএ দেওয়া দরকার। কারণ বিষয়টা আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত। কোনও রাজ্য সরকারের এমন নজরদারি-সংস্থা থাকতে পারে না, বরং এটা কেন্দ্রের একচেটিয়া ব্যাপার।’’