তেজস্বী যাদব। — ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রের পরে এ বার বিহারের বিরোধী জোট নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের নিশানায়। চাকরির বদলে জমি দুর্নীতি মামলায় সোমবার সিবিআই যে দ্বিতীয় চার্জশিট আদালতে জমা দিয়েছে, তাতে নাম রয়েছে আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদ, তাঁর স্ত্রী রাবড়ী দেবী, পুত্র তেজস্বী যাদব-সহ ১৭ জনের। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা তেজস্বী বর্তমানে নীতীশ কুমার সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী, তাঁর বাবা-মা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
বিজেপি-বিরোধী নেতাদের একজোট করার কাজে সম্প্রতি সব চেয়ে বেশি সক্রিয় দেখা যায় মহারাষ্ট্রের শরদ পওয়ার এবং বিহারের নীতীশ কুমার ও তেজস্বী যাদবকে। জোটের প্রথম বৈঠকটিও ছিল পটনায়। এই বৈঠকে ও তার পরে জোটের অলিখিত মুখপাত্রের ভূমিকা নিতে দেখা যায় এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারকে। দু’দিন আগে অজিত পওয়ার ও প্রভাবশালী নেতা প্রফুল্ল পটেলকে ভাঙিয়ে শরদের দলকে অস্তিত্বের সঙ্কটে ফেলে দিয়েছে বিজেপি। তার পরেই বিহার এ বার তাদের নিশানা বলে অভিযোগ বিরোধীদের।
বস্তুত লালুপ্রসাদ, তেজস্বী এমনকি তেজস্বীর বোনেদের বাড়িতেও গত কয়েক মাস ধরে দফায় দফায় তল্লাশি করেছে সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। লালুপ্রসাদ বিদেশ থেকে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করিয়ে আসা মাত্র তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা নিয়ে বিতর্ক উঠেছিল। কারণ এই সময়ে তাঁকে সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে দূরে রাখতে বাড়িতে বিশেষ ব্যবস্থায় থাকতে হয়েছিল। তার পরে সোমবার দ্বিতীয় দফার চার্জশিটে সপরিবার লালুপ্রসাদের নাম রেখেছে সিবিআই। আরজেডি-র সাংসদ মনোজ ঝা মন্তব্য করেছেন, “এটাকে সিবিআইয়ের চার্জশিট বলাটা ঠিক নয়। বলা উচিত বিজেপির দুই শীর্ষ নেতার দেওয়া চার্জশিট। এটা কেবল একটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার কৌশল মাত্র।”
অভিযোগ, ২০০৪ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত লালু রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বিনামূল্যে বা নামমাত্র দামে জমি নিয়ে বেশ কয়েক জনকে রেলের চাকরিতে বহাল করেছেন। সিবিআইয়ের দাবি, এই জমির দলিল লালুর পরিবারের লোকেদের নামে রাখা হয়েছিল। এই কাজে কয়েকটি সংস্থাকে দালাল হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল বলেও দাবি করেছে সিবিআই। এর আগে একটি চার্জশিট পেশ করেছিল সিবিআই। এ দিন দ্বিতীয় চার্জশিটে লালুর পরিবার ছাড়া পশ্চিম রেলের তিন প্রাক্তন বড় কর্তা এবং এ কে ইনফোসিস্টেম নামে একটি মধ্যস্থ সংস্থার নাম রাখা হয়েছে। এর আগে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাবাস করে ফিরেছেন এক সময়ে বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানির রথ আটকে দেওয়া লালুপ্রসাদ। সেই সময়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন লালু। এ বার নতুন মামলায় তাঁকে আসামি করল সিবিআই।