বিজয় মাল্য।— ছবি: পিটিআই।
কোটি কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন। কিন্তু শোধ করার লক্ষণ নেই। বরং ফাঁক ফোকর খুঁজছেন বিজয় মাল্য। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছে সে খবর ছিল। সেই মতো লুক আউট সার্কুলার (এলওসি) জারি করেন তাঁরা। তাতে খাতায় কলমে বলা হয়, কিং ফিশার কর্ণধারকে দেখলেই আটক করা হোক। যেন দেশের বাইরে যেতে না পারেন। তবে এক মাস পরই পাল্টে যায় নির্দেশিকা। জারি হয় দ্বিতীয় এলওসি। তাতে বলা হয়, আটক করার দরকার নেই। বরং তিনি দেশে ফিরছেন না দেশের বাইরে যাচ্ছেন, সেটুকু জানালেই চলবে। একটি সর্ব ভারতীয় সংবাদ সংস্থা মারফত এমনই তথ্য সামনে এল।
তাতে দেখা গিয়েছে, ২০১৫ সালের ১৬ অক্টোবর প্রথম এলওসি জারি করে সিবিআই। মাল্য যাতে দেশের বাইরে পা রাখতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়। তার এক মাস পর, ২৪ নভেম্বর জারি হয় দ্বিতীয় এলওসি। মুম্বই পুলিশের বিশেষ শাখাকে চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। বলা হয়, মাল্যর গতিবিধি সম্পর্কে আগাম খবর যদি না মেলে, সেই আশঙ্কা থেকেই প্রথম নির্দেশিকাটি জারি হয়েছিল। যা সংশোধন করা দরকার। এখনই মাল্যকে আটক করার দরকার নেই। বরং তিনি কখন, কোথা থেকে দেশে ফিরছেন আর কখন, কোথায় যাচ্ছেন, সেটুকু জানালেই চলবে। ভবিষ্যতে তাঁকে আটক করার প্রয়োজন হলে, আলাদা ভাবে জানিয়ে দেওয়া হবে।
২৪ নভেম্বর দ্বিতীয় এলওসি জারি হয়। আর সেই রাতেই নয়া দিল্লিতে পা রাখেন বিজয় মাল্য। অথচ তার ঠিক একদিন আগে, ২৩ নভেম্বর সকালে অ্যাডভান্সড প্যাসেঞ্জার ইনফর্মেশন সিস্টেম (এপিআইএস)-এর মাধ্যমে মাল্যর দেশে ফেরার খবর গোয়েন্দাদের আগাম জানিয়ে দিয়েছিল অভিবাসন দফতর। দিল্লি বিমান বন্দর হয়ে যে তিনি ফিরছেন, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়।
তাই প্রশ্ন উঠছে, গোয়েন্দাদের কাছে কি মাল্যর দেশে ফেরার খবর পৌঁছয়নি? হতে পারে পরে খবর পেয়েছেন। কিন্তু তার পরও তাঁকে আটক করার নির্দেশ দেওয়া হল না কেন? কারণ তার প্রায় তিন মাস পর, ২০১৬ সালের ২ মার্চ লন্ডন পাড়ি দেন মাল্য।
ওই চিঠিতে সই করেছিলেন মুম্বইয়ে সিবিআইয়ের তৎকালীন এসপি হর্ষিতা আত্তালুরি।পাঠানো হয়েছিল মুম্বইয়ের আইপিএস অফিসার অস্বতি দোরজেকে। তাঁদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সেই সময় জয়েন্ট ডিরেক্টর এ কে শর্মাকে রিপোর্ট করতেন হর্ষিতা আত্তালুরি। তাঁরা দু’জনই এখনই পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি।
এর আগে ১৩ সেপ্টেম্বর সিবিআইয়ের তরফে ভুল স্বীকার করা হয়। দু’দিন পর একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়, সেই সময় মাল্যকে গ্রেফতার বা আটক করার মতো যথেষ্ট প্রমাণ ছিল না। তাই এলওসি পরিবর্তন করা হয়।