দুর্নীতির সঙ্গে লড়াইয়ে সরকার সিবিআইয়ের পাশে আছে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন। ফাইল চিত্র ।
ন্যায় এবং সুবিচারের ‘ব্র্যান্ড’-এ পরিণত হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। যখনই কোনও দুর্নীতি হয়, তখনই সাধারণ মানুষের সিবিআইয়ের কথা মনে পড়ে। এমনকি পঞ্চায়েত স্তরেও কোনও দুর্নীতি হলে মানুষ সিবিআই তদন্তের দাবি জানান। সোমবার সিবিআইয়ের হীরক জয়ন্তী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুর্নীতির সঙ্গে লড়াইয়ে সরকার সিবিআইয়ের পাশে আছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘যখনই কোনও দুর্নীতির কথা প্রকাশ্যে আসে, এমনকি সেই দুর্নীতি যদি পঞ্চায়েত স্তরেও হয়, তখনই সাধারণ মানুষের সিবিআইয়ের কথা মনে পড়ে। সিবিআই তদন্তের দাবি তোলেন মানুষ। এর থেকেই বোঝা যায় বছরের পর বছর ধরে সিবিআই নিজেদের কাজের মাধ্যমে ন্যায় এবং সুবিচারের ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে।’’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘যাঁদের বিরুদ্ধে বর্তমানে তদন্ত চলছে তাঁদের অনেক ক্ষমতা। বহু বছর ধরে তাঁরা সরকারি ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু কোনওভাবেই তাঁদের ছেড়ে দিলে হবে না। কোনও দুর্নীতিবাজ যেন ছাড় না পায়। এটাই দেশবাসীর ইচ্ছা। আমি ভরসা দিচ্ছি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সরকার সিবিআইয়ের সঙ্গেই আছে।’’
পাশাপাশি, এই দিন মোদীর ভাষণে উঠে আসে নিয়োগ দুর্নীতির কথাও। তিনি বলেন, ‘‘আগে সরকারি চাকরির নিয়োগে প্রচুর দুর্নীতি হত। টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া হত। অনেক সময় ইন্টারভিউয়ের সময় টাকা চেয়ে দুর্নীতি হত। কিন্তু আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরির গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি নিয়োগে স্বচ্ছতা রাখতে ইন্টারভিউ বন্ধ করে দিয়েছি।’’
সরকারি যোজনায় টাকা নিয়ে দুর্নীতি হওয়ার কথাও প্রধানমন্ত্রী এই দিন উল্লেখ করেন। তিনি জানান, আগে সরকারি যোজনার সুবিধাভোগীদের নানা ভাবে ঠকিয়ে দুর্নীতি হত। তবে কেন্দ্রে ক্ষমতার হাতবদলের পর সেই সুযোগ কমে এসেছে। ভুয়ো সুবিধাভোগীদের খুঁজে বার করে তাঁদের নাম সরকারি যোজনার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
প্রধানমন্ত্রী জানান, বর্তমানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সরকার অনেক বেশি পদক্ষেপ করেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইচ্ছাশক্তির কোনও অভাব নেই সরকারের। প্রয়োজনে দুর্নীতি দমনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন।
মোদী জানান, দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত অনেক মামলা দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকে। এমন মামলাও এসেছে যেখানে অভিযোগ করার ১০ বছর পরেও ঠিক করে তদন্ত শুরু হয়নি। এখনও যে মামলাগুলির তদন্ত চলছে তার মধ্যে অনেক পুরনো মামলাও রয়েছে। আর এই সব মামলায় তদন্তে দেরি হলে দোষীদের শাস্তি দিতে দেরি হয়। তাই সিবিআইয়ের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট বার্তা ‘‘দোষীদের শাস্তি দিতে তদন্ত প্রক্রিয়া কী ভাবে ত্বরান্বিত করা যায়, তা নিয়ে আরও ভাবতে হবে। দোষীদেরও দ্রুত শাস্তি দিতে হবে।’’
সম্প্রতি সরকারের বিরুদ্ধে ইডি-সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। বিরোধীদের দাবি, কন্ঠরোধ করতে কেন্দ্র এই সংস্থাগুলিকে অনৈতিক ভাবে ব্যবহার করছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির তদন্তপ্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। তবে সিবিআইয়ের হীরক জয়ন্তী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মোদী স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির সঙ্গেই রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।