Supreme Court

Supreme Court: কেন্দ্র-রাজ্যের সিবিআই তরজা শীর্ষ আদালতে

ঠিক তিন বছর আগে ১৬ নভেম্বর রাজ্যে সিবিআই তদন্তের সার্বিক সম্মতি প্রত্যাহার করে নিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২১ ০৭:১৪
Share:

সুপ্রিম কোর্টে মোদী সরকারের যুক্তি, সিবিআইয়ের দায়ের করা এফআইআরের সঙ্গে কেন্দ্রের কোনও সম্পর্ক নেই।

ঠিক তিন বছর আগে ১৬ নভেম্বর রাজ্যে সিবিআই তদন্তের সার্বিক সম্মতি প্রত্যাহার করে নিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। গত তিন বছরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি রাজ্য প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই বহু এফআইআর দায়ের করেছে বলে অভিযোগের মুখে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে মোদী সরকারের যুক্তি, সিবিআইয়ের দায়ের করা এফআইআরের সঙ্গে কেন্দ্রের কোনও সম্পর্ক নেই। কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল শীর্ষ আদালতে এই যুক্তি দেওয়ার পরে রাজ্যের পাল্টা জবাব, কেন্দ্রীয় সরকার ও সিবিআই অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত।

Advertisement

এ প্রসঙ্গে রাজ্যের আইনজীবী বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এস্টাব্লিশমেন্ট আইনে কেন্দ্রীয় সরকারই সিবিআই গঠন করেছে। তারা কোন অপরাধের তদন্ত করবে, তার এলাকা কী হবে, সে সবের যাবতীয় ক্ষমতা সিবিআই কেন্দ্রের থেকে পেয়েছে। ফলে কেন্দ্র ও সিবিআই অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত।

রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসায় সিবিআই একের পর এক এফআইআর দায়ের করতে শুরু করার পরে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। রাজ্যের মূল যুক্তি ছিল, সিবিআইয়ের তদন্তের সার্বিক অনুমতি বা ‘জেনারেল কনসেন্ট’ তিন বছর আগে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও তারা পশ্চিমবঙ্গে এফআইআর দায়ের করে চলেছে। সার্বিক সম্মতি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরে রাজ্যের প্রতিটি এফআইআরের ক্ষেত্রে পৃথক ভাবে রাজ্য প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার কথা। সিবিআই তা নেয়নি। সংবিধানের ১৩১তম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বিবাদের বিচার করতে পারে। সেই অনুচ্ছেদের অধীনেই রাজ্য মামলা করেছিল।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই মামলা নাকচের আর্জি জানিয়ে আজ অ্যাটর্নি জেনারেলের যুক্তি, ‘‘সিবিআই এফআইআর দায়ের করছে। তার সঙ্গে কেন্দ্রের কোনও সম্পর্ক নেই। রাজ্য কী ভাবে কেন্দ্রকে এই মামলায় অংশীদার করতে পারে! তাই রাজ্যের মামলা দাঁড়ায় না।’’ অ্যাটর্নি জেনারেল বেণুগোপালের সঙ্গে আজ কেন্দ্র এই মামলায় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা, দুই অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল বিক্রমজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কে এম নটরাজকেও মাঠে নামিয়েছিল। উল্টো দিকে, রাজ্যের পক্ষে ছিলেন সিদ্ধার্থ লুথরা ও বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য।

কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, শীর্ষ আদালত পশ্চিমবঙ্গের অভিযোগ মেনে নিলে, গত তিন বছরে রাজ্যে সিবিআইয়ের দায়ের করা যাবতীয় মামলার অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে পড়বে। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও আরও অনেক রাজ্য দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এস্টাব্লিশমেন্ট আইনের ৬ নম্বর ধারায় সিবিআই তদন্তের সার্বিক অনুমতি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। সেখানেও সমস্যা তৈরি হবে। কেন্দ্র আগেই সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে রাজ্যের সার্বিক অনুমতি প্রত্যাহারের বিরোধিতা করেছিল। তাদের যুক্তি ছিল, রাজ্যের এ রকম সীমাহীন ক্ষমতা নেই। কোনও অভিযুক্তকে আড়াল করার জন্য বা রাজনৈতিক স্বার্থে রাজ্য এই ক্ষমতা কাজে লাগাতে পারে না। বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের বেঞ্চ জানিয়েছে, দু’সপ্তাহ পরে এই মামলার ফের শুনানি হবে।

ভোট পরবর্তী হিংসায় সিবিআই এখনও পর্যন্ত ৪৫টি এফআইআর দায়ের করেছে। কয়লা পাচার কাণ্ডে সিবিআই এফআইআর দায়ের করার পরে প্রধান অভিযুক্ত অনুপ মাজি সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ তুলেছিলেন, রাজ্যের অনুমতি ছাড়াই সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে। রাজ্যের আইনজীবীরাও এ বিষয়ে একই মত জানিয়েছিলেন। এ দিন সেই মামলার শুনানি থাকলেও, তা দু’সপ্তাহের জন্য পিছিয়ে গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement