এইচডি দেবগৌড়া।
দেবগৌড়াকে জেতাতে টাকা ঢেলেছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু দলের নেতারাই বিশ্বাসঘাতকতা করেন। সেই টাকায় বিজেপি প্রার্থীকে জিততে সাহায্য করেন তাঁরা। লোকসভা নির্বাচনে শোচনীয় হারের কারণ খুঁজতে গিয়ে কংগ্রেসের রিপোর্টে এমনই তথ্য উঠে এল।
কর্নাটকে কংগ্রেসের জোটসঙ্গী জনতা দল (সেকুলার)। তাদের নেতা এইচডি দেবগৌড়াকে এ বছর টুমকুর লোকসভা কেন্দ্রটি ছেড়ে দিয়েছিল কংগ্রেস। বিজেপির জিএস বাসবরাজুর বিরুদ্ধে তাঁকে জয়ী করতে সবরকম চেষ্টাও চালিয়েছিল তারা। কিন্তু ফলাফল বেরোলে দেখা যায়, ১৩ হাজার ৩৩৯ ভোটে পরাজিত হয়েছেন দেবগৌড়া।
তার পরই জোটসঙ্গী দেবগৌড়ার পরাজয়ের কারণ খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেয় কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। যার পর কর্নাটকে এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপালকে সবিস্তার রিপোর্ট পাঠান টুমকুর জেলার কংগ্রেস কমিটির সভাপতি আর রামকৃষ্ণ। তাতে স্থানীয় নেতাদের উপরই তিনি হারের দায় চাপিয়েছেন বলে সংবাদ মাধ্যমসূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: লাইভ: দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ মোদীর, রাজসূয় আয়োজন রাইসিনা হিলসে
ওই রিপোর্টে মধুগিরির প্রাক্তন বিধায়ক কেএন রাজন্ন, যুব কংগ্রেসের সহ সভাপতি আর রাজেন্দ্র, গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য জিজে রাজন্ন, চৌডাপ্পা, শান্তলা রাজন্ন, মঞ্জুলা আদিনারায়ণ রেড্ডি-সহ আরও বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেন আর রামকৃষ্ণ। রিপোর্টে তিনি জানান, গতবছর বিধানসভা নির্বাচনে মধুগিরিতে মাত্র ২৫০০ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। অথচ লোকসভা নির্বাচনে সেখানে দেবগৌড়ার চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন বাসবরাজু। দলের নেতারা কংগ্রেসের টাকা বিজেপি ভোটারদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়াতেই তা সম্ভব হয়েছে। যার ফলে মধুগিরিতে ৭২ হাজার ৯০৯ ভোট পেয়েছে বিজেপি।
টুমকুরের প্রাক্তন সাংসদ এসপি মুদ্ধানুমে গৌড়াকে টিকিট না দেওয়াও পরাজয়ের অন্যতম কারণ বলে দাবি করেছেন আর রামকৃষ্ণ। তাঁর কথায়, জেডি (এস)-কে আসনটি ছেড়ে দিলে নির্দল প্রার্থী হিসাবে সেখান থেকে মনোনয়ন জমা দেন এসপি মুদ্ধানুমে গৌড়া এবং কেএন রাজন্ন। তাতে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন দলীয় কর্মীরা। পরে মনোনয়ন তুলে নিলেও, নিজের সমর্থকদের জোট প্রার্থীর হয়ে প্রচার করতে দেননি তাঁরা।
আরও পড়ুন: এখানে আর যদি গন্ডগোল হয়, আমি কিন্তু পুলিশকে ধরব, বললেন মমতা, হাততালি জনতার
টুমকুরে দেবগৌড়া বনাম বাসবরাজুর নির্বাচনী লড়াইকে শুরু থেকেই লিঙ্গায়েত বনাম ভোক্কালিগা-এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে লড়াই বলে উল্লেখ করে এসেছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বিজেপি ঘেঁষা বলে লিঙ্গায়েতদের যেমন পরিচিতি রয়েছে, তেমনই জেডি(এস)-এর জনপ্রিয়তা রয়েছে ভোক্কালিগা সম্প্রদায়ের মধ্যে। তবে বাসবরাজুর চেয়ে সাধারণ মানুষের কাছে দেবগৌড়ার গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি বলেই ধরে নিয়েছিলেন সকলে। কিন্তু শেষমেশ বাসবরাজুই জয়ী হন।