জরজায় সাঁটানো সেই নোট। ছবি: সংগৃহীত।
ঘরের দরজার বাইরের দিকে সাঁটানো একটি কাগজ। তাতে ইংরেজিতে লেখা কয়েকটি শব্দ— ‘কার্বন মনোক্সাইড ইনসাইড। প্লিজ় ডোন্ট সুইচ অন দ্য লাইটস’। দরজা খুলতেই সেই ঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় এক যুবকের দেহ। আর এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে মুম্বইয়ের ভাসাইয়ে।
শনিবার থেকে ভাইকে ক্রমাগত ফোন করছিলেন দিদি। কিন্তু ফোন না ধরায় সন্দেহ হয় মহিলার। বেঙ্গালুরুতে থাকেন তিনি। আর তাঁর ভাই থাকেন মুম্বইয়ে। মনে খটকা লাগায় তিনি মুম্বই পুলিশের অপরাধদমন শাখায় একটি ইমেল করে বিষয়টি জানান। সেই ইমেল পেয়েই যুবকের ফোনের অবস্থান চিহ্নিত করে ভাসাইয়ের কামান এলাকায় যায় নয়গাঁও থানার পুলিশ। ফোনের অবস্থান চিহ্নিত করে একটি বাংলোয় পৌঁছোয় তারা।
বাংলোয় পৌঁছে পুলিশ দেখে, দরজার গায়ে একটি কাগজ সাঁটানো সেলোটেপ দিয়ে। তাতে লেখা রয়েছে, ঘরে কার্বন মনোক্সাইড রয়েছে। কেউ আলো জ্বালাবেন না। দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। ভেঙে ঘরের ভিতরে ঢুকতেই গ্যাসের গন্ধ পায় পুলিশ। তার পরই তারা দেখে বিছানায় নিথর হয়ে পড়ে রয়েছেন বছর সাতাশের এক যুবক। তাঁর মুখে মাস্ক লাগানো। মাস্কের সঙ্গে জোড়া রয়েছে একটি পাইপ। সেই পাইপটি যুক্ত কার্বন মনোক্সাইডের একটি সিলিন্ডারের সঙ্গে। শুধু তা-ই নয়, গ্যাস যাতে ঘরের বাইরে বেরোতে না পারে, তার জন্য জানলাগুলি পুরোপুরি আটকে দেওয়া হয়েছিল।
ঘরের ভিতর থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করে পুলিশ। সেখানে লেখা, ‘‘আমি স্নায়ুর জটিল রোগে ভুগছি। এর যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছিলাম না। জীবনের আয়ু আর দেড় বছর। অনেক ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করেছি। কিন্তু কেউই এই রোগ থেকে মুক্তির আশ্বাস দিতে পারেননি। জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছিল। আমার শারীরিক অবস্থার জন্য কাজ হারাতে চলেছি।’’ পরিচিত লোকজন, বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়দের কাছেও ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন তিনি। দুর্দিনে তাঁরা যে ভাবে পাশে থেকেছেন তার জন্য কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন ওই চিঠিতে। পুলিশ মনে করছে, বিষাক্ত গ্যাস শরীরে প্রবেশ করাতেই মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।