হাসপাতালে বিকাশের দেহ। ছবি টুইটার থেকে নেওয়া।
মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীর মন্দিরে গ্রেফতার হওয়ার পর কানপুরে আনা হচ্ছিল গ্যাংস্টার বিকাশ দুবেকে। কিন্তু কানপুর পৌঁছনোর আগেই শুক্রবার সকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হল বিকাশ। যে সংঘর্ষ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
পুলিশের দাবি, হাইওয়ে দিয়ে ফেরার সময়, পুলিশের কনভয়ের যে গাড়িতে বিকাশ ছিল, সেই গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে উল্টে যায়। গাড়ি উল্টে যেতেই এক পুলিশকর্মীর পিস্তল ছিনিয়ে নেয় বিকাশ। তার পর পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ তাকে আত্ম সমর্পণ করতে বলায়, পুলিশকর্মীদের দিকেও গুলি ছোড়ে সে। আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালানো হয় বলে দাবি পুলিশের। কানপুর পশ্চিমের পুলিশ সুপার সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘গাড়ি দু্র্ঘটনা হতেই পিস্তল ছিনিয়ে পালানোর চেষ্টা করে বিকাশ দুবে। পুলিশ তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলার পরেও সে গুলি চালায়। বাধ্য হয়ে পাল্টা গুলি চালায় পুলিশ।’’
পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেই তাকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। কানপুরের আইজি মোহিত আগরওয়াল জানিয়েছেন, ওই সংঘর্ষের ঘটনায় চার পুলিশ কর্মীও আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ঝুলছে ৬০ মামলা, কানপুরে পুলিশহত্যার নায়ক বিকাশ হার মানাবে বলিউডের স্ক্রিপ্টকেও
গত সপ্তাহে কানপুরের কাছে ভিকরু গ্রামে বিকাশ দুবেকে ধরতে গিয়ে মৃত্যু হয় এক ডিএসপি-সহ আট পুলিশ কর্মীর। তার পর থেকেই কানপুরের ডনকে গ্রেফতার করা নিয়ে চলছিল টানটান নাটক। অবশেষে বৃহস্পতিবার উজ্জয়িনীর মহাকাল মন্দির থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারির পর উত্তরপ্রদেশে ফিরিয়ে আনার সময়ই ঘটল এই ঘটনা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হল বিকাশের।
আরও পড়ুন: জাতপাত আর রাজনীতির মিশেলেই উত্থান বিকাশের
বিকাশের গ্রেফতারির পর বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছিল বিভিন্ন মহলে। আজ পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যুর পরও সে রকম কিছু প্রশ্ন উঠে আসছে। কী ভাবে কনভয়ে বিকাশের গাড়িই দুর্ঘটনার কবলে পড়ল তা এখনও জানা যায়নি। তার হাতে কী হাতকড়া পরানো ছিল? জানা যায়নি তা-ও। তবে এর মধ্যেই বিকাশের মৃত্যু নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে নিশানা করে টুইট করেছেন বিরোধী নেতারা। সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব লিখেছেন, “আসলে এই গাড়ি উল্টে যায়নি। এই গাড়ি না উল্টে গেলে সরকার উল্টে যেত।” কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ লিখেছেন, ‘‘আমরা যেটা সন্দেহ করছিলাম, সেটাই ঘটল। বিকাশ দুবের সঙ্গে কোন কোন রাজনৈতির নেতা ও পুলিশ অফিসাররা জড়িয়ে ছিল, তা আর জানা যাবে না।’’ বিকাশের মৃত্যু নিয়ে শিবসেনার সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীর কটাক্ষ, ‘‘বিকাশে মৃত্যুতে বাঁশও থাকল না, আর বাঁশিও বাজবে না।’’