জাস্টিন ট্রুডো। —ফাইল চিত্র।
ভারত থেকে ৪১ জন কূটনীতিককে সরিয়ে নেওয়ার দিনই এ দেশে বসবাসকারী কানাডার নাগরিকদের নতুন করে সতর্ক করল অটোয়া। শুক্রবার কানাডার তরফে সে দেশের নাগরিকদের তিনটি ভারতীয় শহর সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই শহরগুলিতে ‘অতি সাবধানে’ চলাফেরা করুন। এই তিন শহর হল চণ্ডীগড়, বেঙ্গালুরু এবং মুম্বই।
কানাডার তরফে ভারতে বসবাসকারী নাগরিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া যেন কেউ ওই তিন শহরে না যান। ওই তিন শহরে কোনও সমস্যায় পড়লে তৎক্ষণাৎ নয়াদিল্লির দূতাবাসে যোগাযোগ করতেও বলা হয়েছে। ‘সন্ত্রাসবাদী হামলা’র আশঙ্কা থেকেই এই পরামর্শ বলে জানিয়েছে অটোয়া।
তবে শুধু ওই তিন শহর নয়, ‘সন্ত্রাসবাদ এবং উগ্রপন্থী কার্যকলাপের’ জন্য অসম এবং মণিপুর যেতে নিষেধ করা হয়েছে কানাডার নাগরিকদের। একই ভাবে ‘অনভিপ্রেত নিরাপত্তা পরিস্থিতি’র জন্য জম্মু ও কাশ্মীর এবং গুজরাত, পঞ্জাব এবং রাজস্থানের পাকিস্তান লাগোয়া অংশে যেতেও বারণ করা হয়েছে।
খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরের হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিতর্ক বেড়েই চলেছে। আর সেই সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ফাটল আরও চওড়া হচ্ছে কানাডা এবং ভারতের মধ্যে। নিজ্জরের হত্যায় ভারতের দিকে কানাডা অভিযোগের আঙুল তোলার পর থেকেই কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়। সেই টানাপড়েন এখনও অব্যাহত।
আর সেই টানাপড়েনের মধ্যে ভারত থেকে ৪১ জন কূটনীতিককে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছে কানাডা। এই কূটনীতিকদের পরিবারের ৪২ জন সদস্যকেও সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতি জারি করে ভারত থেকে তাদের কূটনীতিকদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে কানাডার বিদেশ মন্ত্রক। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “ভারত সরকার জানিয়েছে, এখান থেকে কূটনীতিকদের সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে ২০ অক্টোবরের মধ্যে। আর তার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” একই সঙ্গে জোলি জানান, চণ্ডীগড়, মুম্বই এবং বেঙ্গালুরুতে কানাডার যে উপদূতাবাস রয়েছে, সেগুলির কাজ আপাতত স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। যে ভাবে কূটনীতিকদের সরানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে, তাতে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে আরও প্রভাব পড়তে পারে বলে জানান জোলি।
বুধবার তিনি জানিয়েছিলেন, নয়াদিল্লি যে ভাবে কূটনীতিকদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছে, তা শুধু নজিরবিহীনই নয়, আন্তর্জাতিক আইনেরও পরিপন্থী। প্রসঙ্গত, নিজ্জর খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন অব্যাহত। ‘কূটনৈতিক ভারসাম্য’ রক্ষার স্বার্থে ভারতে থাকা কানাডার কূটনীতিকদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জাস্টিন ট্রুডোর সরকারকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল নয়াদিল্লি। তার পরই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।