প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।
কানাডা-ভারত দ্বৈরথ আরও এক ধাপ বাড়ল। সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তান কানাডার নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন কানাডার গোয়েন্দারা। ভারত যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কানাডার নিরাপত্ত বিষয়ক গোয়েন্দা সংস্থা (সিএসআইএস) সম্প্রতি একটি তদন্ত রিপোর্টের নির্যাস প্রকাশ করে, যাতে ২০১৯ এবং ২০২১-এর সাধারণ নির্বাচনে যথাক্রমে পাকিস্তান এবং ভারত গোপনে সক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ। তারা কানাডার নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চেয়েছিল বলে গোয়েন্দাদের দাবি। তাদের বক্তব্য, ২০২১ সালে ভারত সরকার কানাডার ভারতীয়-অধ্যুষিত নির্বাচনী এলাকাগুলি নিয়ে আলাদা করে নজরদারি চালিয়েছিল। খলিস্তানপন্থী এবং পাকিস্তানপন্থী ভোটারদের উপরে নজর ছিল। প্রক্সি এজেন্ট তৈরি করে অর্থের বিনিময়ে জনমত ঘোরানোর চেষ্টাও হয়েছিল বলে কানাডার দাবি। একই রকম ভাবে ২০১৯ সালে পাকিস্তান তার নিজের স্বার্থ ইন্ধন দিতে সক্রিয় ছিল বলেও অভিযোগ। এ বছর জানুয়ারি মাসে এই তদন্তের ব্যাপারে অগ্রসর হয় কানাডা। গত বছরে কানাডায় চিনের প্রভাব খাটানোর ব্যাপারে গোয়েন্দা রিপোর্ট ফাঁস হওয়ার পরেই পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্তের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। চিনের পাশাপাশি নাম জড়ায় রাশিয়া, ভারত, পাকিস্তানেরও।
ভারত অবশ্য গোড়া থেকেই এই সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসেই বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘‘কানাডীয় কমিশনের তদন্ত বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে জেনেছি। কানাডার নির্বাচনে ভারতীয় হস্তক্ষেপের ভিত্তিহীন অভিযোগ আমরা ঘোরতর ভাবে অস্বীকার করছি। অন্য দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করা ভারতের নীতি নয়। বরং উল্টোটাই সত্যি। কানাডাই আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলিয়ে আসছে।’’
তবে ভারতে ভোটের আগে এই তরজায় কানাডা-ভারত সম্পর্ক আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। খলিস্তানি জঙ্গি নেতা নিজ্জর হত্যায় ভারতের হাত রয়েছে বলে স্বয়ং ট্রুডো অভিযোগ করার পর থেকেই দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে অবনতি হয়েছে। সেটা মেরামত হওয়ার আগেই এই নতুন দফার অভিযোগ পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।