সাদফ জাফর
যোগী আদিত্যনাথের পুলিশ চুলের মুঠি ধরে তাঁর পেটে লাথি মেরেছিল বলে অভিযোগ আনলেন অভিনেত্রী ও সমাজকর্মী সাদফ জাফর। আর এক সমাজকর্মী প্রাক্তন আইপিএস অফিসার এসআর দারাপুরীও আজ পুলিশি নির্যাতনের কথা শুনিয়েছেন। অভিযোগ এনেছেন, লকআপে থাকার সময়ে প্রবল শীতের মধ্যে একটি কম্বল চেয়েছিলেন তিনি। তা দিতে অস্বীকার করে পুলিশ। ৭৬ বছর বয়সি ক্যান্সার আক্রান্ত ওই সমাজকর্মীকে গ্রেফতারের পরে সারাদিন খেতেও দেওয়া হয়নি।
নয়া নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরোধিতায় লখনউয়ে একটি বিক্ষোভে অংশ নিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন সাদফ। একই কারণে গ্রেফতার হন দারাপুরীও। তিন সপ্তাহ জেলে কাটানোর পরে জামিন পেয়ে জেল থেকে আজ ছাড়া পেয়েছেন দু’জনে। শুনিয়েছেন, পুলিশের হাতে কী ভাবে অত্যাচারিত হয়েছেন তাঁরা।
জাফর বলেন, ‘‘গ্রেফতারের পরে, নামের জন্য আমাকে পাকিস্তানি বলা হচ্ছিল। সে কথা বলে অনেকেই আমাকে থাপ্পড় মারেন। বিক্ষোভের সময়ে এক মহিলা পুলিশকর্মীর বাইক পোড়ানো হয়েছিল। তিনি জানান, বদলা নেবেন। তার পরেই নখ দিয়ে আমার মুখ খামচে ধরেছিলেন।’’ নির্যাতন অবশ্য এতেই শেষ হয়নি। অভিনেত্রী বলেন, ‘‘বেশি রাতে আমাকে জানানো হয়, আইজি সাহেব দেখা করতে চান। ভেবেছিলাম, তিনি আমার পরিবারকে খবর দিতে সাহায্য করবেন। কিন্তু তাঁর ঘরে যেতেই প্রবল গালিগালাজ শুরু হয়ে যায়। আইজি এক মহিলা পুলিশকর্মীকে বলেন আমাকে পেটাতে জন্য। কিন্তু তাতেও সন্তুষ্ট হননি তিনি। পরে নিজেই আমার চুলের মুঠি ধরেন। লাথি মারেন পেটে।’’ সাদফের অভিযোগ নিয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের শীর্ষ কর্তা ও পি সিংহ জানিয়েছেন, বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত নন তিনি। তবে নির্দিষ্ট অভিযোগ এলে তদন্ত করাবেন।
দারাপুরী অবশ্য মারধরের অভিযোগ আনেননি। তবে তিনি বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে পুলিশ আমাকে তুলে নিয়ে যায়। তবে ওরা বলেছে, কোনও একটা পার্ক থেকে নাকি গ্রেফতার করা হয়েছিল। হজরতগঞ্জ থানায় তখন মধ্যরাত। প্রবল ঠান্ডা। আমার কাছে শীতের কাপড়ও কিছু ছিল না। পুলিশকে একটা কম্বল আর কিছু খাবার দিতে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু সে সব দিতে অস্বীকার করে ওরা।’’ প্রাক্তন আইপিএসের কথায়, ‘‘লখনউ পুলিশের ব্যবহারের কথা ভাবতে লজ্জা হচ্ছে, এগুলি তো মানুষের ন্যূনতম চাহিদা।’’ কংগ্রেস কর্মী সাদাফ ও সমাজকর্মী দারাপুরীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে লখনউ গিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। সাদাফের মুক্তির দাবিতে সরব হয়েছিলেন চিত্র পরিচালক মীরা নায়ার। সাদফ আজ বলেন, ‘‘যোগীজি আমার জেল যাওয়া আর মার খাওয়ার ভয় কাটিয়ে দিয়েছেন।’’