লখনউয়ে অবস্থান বিক্ষোভে মহিলারা। ছবি: পিটিআই
কম্বল, খাবার, থালা-বাসন কেড়ে নেওয়া হয়েছিল আগেই। লখনউ-এর ঘণ্টাঘরে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে অবস্থানে বসা মহিলা-শিশুদের বিরুদ্ধে এ বার দায়ের হল ‘দাঙ্গা’র মামলা। এ ছাড়াও আরও দু’টি ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে। মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে নাম রয়েছে বিখ্যাত উর্দু কবি মুনওয়ার রানার দুই মেয়ে সৌমিয়া ও ফউজিয়ার। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করেছে লখনউ পুলিশ।
দিল্লির শাহিনবাগের আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়ে শুক্রবার থেকে লখনউ-এর বিখ্যাত ঘণ্টাঘর এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান-বিক্ষোভে বসেছেন মহিলারা। তাঁদের মধ্যে অনেকে এমনও রয়েছেন, যাঁরা কোলের শিশুকে নিয়েও প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন। শুক্রবার জনা পঞ্চাশেক মহিলা অবস্থানে বসলেও প্রতিদিন তার বহর বাড়ছিল। ধীরে ধীরে কয়েক হাজারে পৌঁছে গিয়েছে প্রতিবাদকারীর সংখ্যা।
সেই অবস্থান তুলতে গোড়া থেকেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে লখনউ পুলিশ। কিন্তু কিছুতেই কাজ না হওয়ায় শনিবার রাতে প্রতিবাদীদের কম্বল, থালা-বাসন ছিনিয়ে নিয়ে আসে পুলিশ। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। বরং প্রতিবাদীদের মনোভাব আরও নাছোড় পর্যায়ে চলে গিয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধেই এ বার দাঙ্গা বাধানোর অভিযোগ আনল পুলিশ।
আরও পড়ুন: ‘ছাত্রজীবন কাটালে তো ছাত্রদের বুঝবেন!’
লখনউ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট তিনটি ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে প্রতিবাদী মহিলাদের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে অন্যতম দাঙ্গা বাধানো। এ ছাড়াও রয়েছে বেআইনি জমায়েত, উত্তেজনায় প্ররোচনা দেওয়ার মতো অভিযোগ। উর্দু কবির দুই মেয়ে ছাড়াও অন্যদেরও নাম করে এই ধারায় মামলা ঠুকেছে পুলিশ। এর বাইরেও শতাধিক অজ্ঞাতপরিচয়ের বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা দান’, ‘সরকারি আধিকারিকদের নির্দেশ না মানা’র মতো অভিযোগও দায়ের করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ‘টুকড়ে টুকড়ে’ কারা, জানে না শাহ-মন্ত্রকই
সিএএ-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ গোড়া থেকেই কড়া হাতে দমন করছে যোগী-রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন। রাজ্যে অগ্নিগর্ভ বিক্ষোভ-আন্দোলনে গুলিতে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবার মৃত্যুই পুলিশের গুলিতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠলেও তাদের গুলিতে মাত্র এক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্বীকার করেছে পুলিশ। এ বার এই আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। যোগীর পুলিশ-প্রশাসন জোর করে অবস্থান-বিক্ষোভ তুলে দেওয়া বা গ্রেফতার করার সিদ্ধান্তও নিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।