প্রতীকী ছবি।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন(সিএএ) নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না এনআরসি-ছুট হিন্দু বাঙালিদের। কী কী শর্তপূরণ করে কাদের আবেদন করতে হবে, তা নিয়ে তাঁরা বিভ্রান্ত। একই নথি জমা দিয়ে যাঁদের পরিবারের অন্যদের নাম উঠেছে, কিন্তু দু’একজন বাদ পড়েছেন, তাঁরা আরও দুশ্চিন্তায়— ‘শরণার্থী’ পরিচয়ে নাগরিকত্বের আবেদন জানাবেন, নাকি নতুন এনআরসির জন্য অপেক্ষা করবেন! নয়া আইনে নাগরিকত্বের আবেদন জানালে ধর্মীয় নির্যাতনের প্রমাণ দিতে হবে কি?
গত ৩১ অগস্ট প্রকাশিত অসমের ‘এনআরসি’ বাতিল হয়েছে কি না তা নিয়েও সংশয়। বাতিল হলে কী ফরেনার্স ট্রাইবুনালে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে?— ঘুরছে নানা প্রশ্ন। কিন্তু কোনও জবাব নেই।
নয়া আইনে এনআরসি-ছুট হিন্দু বাঙালিরা উপকৃত হবেন, এ কথা বলা হলেও তাঁদের বড় অংশই ‘শরণার্থী’ পরিচয়ে নাগরিকত্বের পক্ষপাতী নন। তাঁরা চান, ১৯৭১ সালের আগের নথিপত্র পরীক্ষা করে তাঁদের নাগরিক ঘোষণা করা হোক। ব্যতিক্রম নন শিলচরের বিজেপি বিধায়ক তথা প্রাক্তন ডেপুটি স্পিকার দিলীপকুমার পালও। অগস্টে প্রকাশিত এনআরসিতে তাঁর স্ত্রী অর্চনার নাম ওঠেনি। তবে তিনি স্ত্রীর জন্য সিএএ-তে আবেদনের পক্ষপাতী নন। দিলীপ বলেন, ‘‘অর্চনার বাবা-কাকা ১৯৪৮ সালে শিলচরে জমি কিনেছিলেন। তার দলিল সংগ্রহ করে এনআরসির জন্য আবেদন করা হয়েছিল। বাবা-মেয়ের লিঙ্ক হিসেবে প্যান কার্ড দেওয়া হয়েছিল, মানা হয়নি।’’ তাঁর দাবি, নতুন করে এনআরসি প্রক্রিয়া শুরু হলে স্ত্রীয়ের নাম বাদ পড়বে না।
সিএএ-তে খুশি সৌরভ চক্রবর্তী, মনোজ দেবরা। তবু তাঁদের কেউই নতুন করে নাগরিকত্বের আবেদন করবেন না। সৌরভ এনআরসি-ছুট স্ত্রীর নানা নথি দেখিয়ে প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কেন ধর্মীয় নির্যাতনের শর্ত মেনে আবেদন করবেন আমার স্ত্রী?’’ এনআরসি-তে মনোজ ও তাঁর স্ত্রীয়ের নাম উঠলেও বাদ পড়েছেন তাঁদের মেয়ে। মনোজের প্রশ্ন, ‘‘বাবা-মার নাম থাকার পরও কি মেয়েকে সংশোধিত আইনে আবেদন করতে হবে!’’
নতুন আইন নিয়ে বরাক বিজেপির উচ্ছ্বসিত কেন? দিলীপের দাবি, ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে ১৯৭১ সালের পরেও অনেকে বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। নথির অভাবে অনেকে এনআরসির জন্য আবেদন করতে পারেননি। এই সংশোধনীতে তাঁরাও নাগরিকত্ব পাবেন।