কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
কার্যত নজিরবিহীন ভাবে আবার ছ’মাসের জন্য সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর ধারা তৈরির জন্য সংসদীয় সচিবালয়ের কাছে সময় চাইল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এই নিয়ে সপ্তম বার সময় চেয়ে আবেদন করল অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণাধীন মন্ত্রক।
দীর্ঘ সময় ধরে পশ্চিমবঙ্গে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাওয়ার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ থেকে আসা মতুয়া সমাজ। কিন্তু যে ভাবে প্রতি ছ’মাস অন্তর ওই আইনের ধারা তৈরির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সময় চেয়ে চলেছে, তাতে আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে এটি আদৌ আইনে রূপায়িত হবে কিনা, তা নিয়ে কেবল মতুয়া সমাজই নয়, সংশয়ে রয়েছেন মতুয়া সমাজের নেতা তথা বনগাঁর সাংসদ শান্তুনু ঠাকুরও। যদিও বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দাবি, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সমাজের কথা মাথায় রেখে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চালু করতে বদ্ধপরিকর নরেন্দ্র মোদী সরকার।
২০১৯ সালে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সংসদে পাস করিয়েছিল মোদী সরকার। ওই আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা (হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, পার্সি, খ্রিস্টান) যদি ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে আশ্রয় নিতে চান, সে ক্ষেত্রে তাঁদের নাগরিকত্ব দেবে ভারত। কেন ওই তালিকায় মুসলিম সমাজের নাম নেই, তা নিয়ে পথে নামে সংখ্যালঘু সমাজ ও বিরোধী দলগুলি। কিন্তু ২০১৯ সালে ওই আইন সংসদে পাশ হওয়ার পরে তিন বছরের বেশি সময় কেটে গেলেও আইনের ধারা তৈরি করতে পারেনি মোদী সরকার।
সরকারের এই গড়িমসি যে তাঁদের বিপক্ষে যেতে পারে তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন বিজেপির বঙ্গ নেতৃত্ব। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘ইতিমধ্যেই মতুয়া ভোটের একটি বড় অংশ দলের পিছন থেকে সরে যাওয়ার পথে। অবিলম্বে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পালন না হলে লোকসভায় দলের ভরাডুবি কেউ রুখতে পারবে না।’’ আর তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, তাদের প্রকৃত শুভাকাঙ্ক্ষী কারা তা মতুয়া সমাজ বুঝতে পারছে। বিজেপি যে কেবল ভোটের জন্য মতুয়া সমাজকে ব্যবহার করেছিল তা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে।