প্রতীকী ছবি।
পশ্চিমবঙ্গ, তেলঙ্গানা, রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলি আগেই দাবি তুলেছিল, কম দামি পোশাকের উপরে জিএসটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হোক। অর্থ মন্ত্রক তাতে কান দেয়নি। এ বার খোদ নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহর রাজ্য গুজরাত থেকে এই আপত্তি উঠেছে। চাপের মুখে কম দামের তৈরি পোশাকের উপর জিএসটি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে চাইছে মোদী সরকার।
শনিবার, ১ জানুয়ারি থেকে পোশাকের উপরে জিএসটি ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ১২ শতাংশ হওয়ার কথা। তার আগেই তড়িঘড়ি শুক্রবার জিএসটি পরিষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, বৈঠকে ১০০০ টাকার কম দামের পোশাকে জিএসটি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার সম্ভাবনাই বেশি। কোনও রাজ্যই এতে আপত্তি তুলবে বলে মনে হয় না। সে ক্ষেত্রে পরিষদের বৈঠকের পরেই রাতে বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেওয়া হবে। আজ রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের কাছে জিএসটি পরিষদের যে আলোচ্যসূচি পাঠানো হয়েছে, তাতে পোশাকে জিএসটি-ই একমাত্র বিষয়। গুজরাত থেকে যে এই জিএসটি বৃদ্ধি নিয়ে আপত্তি উঠেছে, তারও উল্লেখ রয়েছে আলোচ্যসূচিতে।
গত সেপ্টেম্বরে লখনউয়ে জিএসটি পরিষদের বৈঠকে সব রকম তৈরি পোশাকে জিএসটি ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত হয়। তার আগে পর্যন্ত ১০০০ টাকার কম দামের পোশাকে জিএসটি-র হার ৫ শতাংশ ছিল। সে সময়ই পশ্চিমবঙ্গের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য-সহ একাধিক রাজ্যের অর্থমন্ত্রী এতে আপত্তি তুলেছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। কেন্দ্রের লক্ষ্য ছিল, ‘ইনভার্টেড ডিউটি স্ট্রাকচার’ বা কাঁচামালে বেশি জিএসটি, তৈরি পণ্যে কম জিএসটি-র সমস্যা দূর করা। কারণ এই সমস্যা থাকলে মূল পণ্যের দাম আখেরে বেড়েই যায়। জিএসটি আদায়ের থেকে কাঁচামালে মেটানো কর বেশি পরিমাণে ছাড় দিতে হয়।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র গত সপ্তাহেই অভিযোগ তুলেছিলেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের ফলে অন্তত ১ লক্ষ ছোট শিল্প কারখানা বন্ধ হবে। প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ কাজ হারাতে পারেন। রাজস্ব আয় বাড়ার বদলে আখেরে কমবে। আজ রাজস্থান, তেলঙ্গানার অর্থমন্ত্রীরা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরাও জিএসটি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে দাবি জানাবেন। আজ বাজেট প্রস্তুতিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকেও জিএসটি প্রসঙ্গ উঠেছে। বিজেপি শাসিত থেকে বিরোধী শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা দাবি করেছেন, ২০২২-এর পরেও সেস বসিয়ে রাজ্যের জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটানোর ব্যবস্থা বজায় থাকুক।