প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই।
সরকারের দায় কমিয়ে অর্থনীতির প্রায় সব ক্ষেত্রেই বেসরকারি সংস্থার ভূমিকা বাড়ানোর কথা বারবার বলছেন তিনি। তার পরেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মতে, এ দেশে এখনও কার্যকরী রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ও বিমা সংস্থার প্রয়োজন রয়েছে। তবে ব্যাঙ্ক ও বিমা ক্ষেত্রে সংস্কারের কাজ চলবে বলেই আজ ফের জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ব্যাঙ্ক-বিমার মতো চারটি ক্ষেত্র ছাড়া আর সব ক্ষেত্রেই মোদী সরকার যাবতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যাঙ্ক-বিমাতেও হাতে গোনা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা রাখার নীতিতে চলতি বছরেই দু’টি সরকারি ব্যাঙ্ক ও একটি বিমা সংস্থার বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার।
আজ প্রধানমন্ত্রী ব্যাঙ্ক-বিমার মতো আর্থিক পরিষেবা ক্ষেত্রে বাজেটের ঘোষণার রূপায়ণ নিয়েই সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে ওয়েবিনার করেন। বৈঠকে মনমোহন সিংহ সরকারের আমলের নীতিকে দুষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০-১২ বছর আগে ‘আগ্রাসী ঋণ বিলি’-র নামে ব্যাঙ্ক ক্ষেত্রের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। তাঁর সরকার এই ‘অস্বচ্ছ ঋণনীতি’ থেকে বেরিয়ে আসতে পদক্ষেপ করেছে বলেও মোদী দাবি করেন। তাঁর দাবি, ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদ বা লুকিয়ে রাখা ঋণও কার্পেটের তলা থেকে বের করে আনা হয়েছে। তবে কোনও শিল্প সংস্থাকে দেওয়া ঋণ শোধ না হলে তার পিছনে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বা শিল্প সংস্থার অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে বলে সরকার ধরে নেবে না বলে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বুঝি, ব্যবসায় অনিশ্চয়তা থাকবেই। যে কোনও ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত ভুল হলেই যে তার পিছনে খারাপ উদ্দেশ্য নেই, তা-ও আমরা জানি। সরকারের দায়িত্ব, সঠিক উদ্দেশ্যে নেওয়া ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তের পাশে দাঁড়ানো।’’
মনমোহন সরকারের নীতির সমালোচনা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার দেদার বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়ে এ দিনও মোদী সরকারকে চড়া ভাষায় আক্রমণ করেছে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, ‘হাম দো হামারে দো’ সরকারের নীতি মেনে দেশের সম্পদ প্রধানমন্ত্রীর বন্ধুদের মধ্যে বিলি করে দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। তা ছাড়া বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলির ঋণ শোধ নিয়ে মোদী সরকারের নরম মনোভাবের ফলে ব্যাঙ্কগুলির অনুৎপাদক সম্পদের পরিমাণ বহু গুণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে। তার ফলে একদিকে যেমন ব্যাঙ্কগুলি চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে, তেমনই ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের অর্থনীতিও। সামগ্রিক ভাবে আমজনতাকেই তার দাম দিতে হবে বলে এ দিন জানিয়েছে কংগ্রেস।