স্কুলপড়ুয়াদের সঙ্গে ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানে আলোচনায় মোদী। ছবি: পিটিআই।
মাসখানেক আগে রোদচশমা পরে সূর্যগ্রহণ দেখতে বেরিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। দিল্লির মেঘলা আকাশে সূর্যের দেখা মেলেনি। কিন্তু জার্মান ব্র্যান্ডের ‘দেড়লাখি’ চশমা নিয়ে ভালই চর্চা হয়েছিল। সমালোচকরা প্রশ্ন তুলেছিলেন, মুখে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র কথা বলে প্রধানমন্ত্রীর চোখে বিদেশি ব্র্যান্ডের চশমা কেন?
আজ স্কুলপড়ুয়াদের প্রধানমন্ত্রী উপদেশ দিলেন, অর্থনীতিকে মজবুত করতে তাঁরা যেন এ দেশে তৈরি ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র জিনিসপত্রই কেনেন। প্রধানমন্ত্রীর মতে, এতে অর্থনীতির সুবিধা হবে। দেশ আরও মজবুত হবে। আজ ‘পরীক্ষা পে চর্চা’য় ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন মোদী। বললেন, ‘‘আমরা কি সিদ্ধান্ত নিতে পারি যে দেশের স্বাধীনতার যখন ৭৫ বছর পূর্ণ হবে, সেই ২০২২ থেকে আমরা সব ভারতে তৈরি পণ্যই কিনব? আমরা ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’য় উৎসাহ দেব?’’
বিরোধীদের পাল্টা প্রশ্ন, মোদী সরকার কি অর্থনীতি নিয়ে এতখানিই দিশেহারা যে স্কুলপড়ুয়াদের কাছে দেশি পণ্য কেনার আর্জি জানাতে হচ্ছে! প্রধানমন্ত্রী পড়ুয়াদের জল, বিদ্যুৎ অপচয় বন্ধ করতেও বলেছেন। সেই প্রসঙ্গ টেনেও বিরোধীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, মোদী জমানায় বিদ্যুতের উৎপাদন ও চাহিদা টানা ১২ মাস ধরে কমছে। বাজারে চাহিদা নেই। কারখানায় উৎপাদন কমছে। ফলে বিদ্যুতের চাহিদাও কমছে। সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির মন্তব্য, ‘‘অর্থনীতির অবস্থা কতখানি খারাপ, এটা তার আর একটা মাপকাঠি।’’
আরও পড়ুন: ‘ছাত্রজীবন কাটালে তো ছাত্রদের বুঝবেন!’
প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে আজ অবশ্য শুধু স্কুলপড়ুয়ারাই ডাক পেয়েছিলেন। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের প্রবেশাধিকার মেলেনি। নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে এখন পড়ুয়ারাই বিক্ষোভ করছেন। গত সপ্তাহে দিল্লিতে বিরোধী দলগুলির বৈঠকের পর কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী প্রধানমন্ত্রীকে যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পড়ুয়াদের মুখোমুখি হওয়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন। আজও প্রধানমন্ত্রীর নিজের ‘ডিগ্রি’ নিয়ে কটাক্ষ করে কংগ্রেসের কপিল সিব্বলের মন্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর উচিত এমন একটা অনুষ্ঠান করা যেখানে সবাই নিজের ডিগ্রি, সাফল্য নিয়ে একে অন্যের সঙ্গে কথা বলবে।’’