ধৃত মহম্মদ ইফান।
ধনীদের টাকা, গাড়ি লুঠ করে গরিবদের সাহায্য করাই ছিল তাঁর কাজ। ঠিক যেন বাস্তবের ‘রবিনহুড’! গত ৭ জানুয়ারি দিল্লি থেকে গ্রেফতার হয়েছেন তিনি।
নাম মহম্মদ ইরফান। বিহারের সীতামঢ়ীর উজলা গ্রামের বাসিন্দা। বহু চুরি এবং লুঠের মামলা ঝুলছে তাঁর বিরুদ্ধে। আইনের চোখে অপরাধী হলেও উজলা গ্রামের মানুষের কাছে তিনি কিন্তু ‘ত্রাতা’। স্থানীয় এলাকায় তিনি ‘রবিনহুড উজলা’ নামেই বেশি পরিচিত।
মহম্মদের ‘শখ’ বলতে বিত্তবান ব্যক্তিদের টাকা চুরি করে সেই টাকায় দামি গাড়ি কেনা এবং সমাজসেবার কাজে সেই টাকা কাজে লাগানো। গ্রামে গরিবদের স্বাস্থ্য শিবিরের জন্য টাকা দিতেন তিনি। এ ভাবেই ধীরে ধীরে তিনি গরিবদের ‘মসিহা’ হয়ে উঠেছিলেন।
তাঁর নেটওয়ার্ক বিহারের গণ্ডি ছাড়িয়ে দিল্লি, পঞ্জাব এবং দেশের অন্য প্রান্তেও বিস্তৃত হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরেই মহম্মদের খোঁজ চালাচ্ছিল বিহার পুলিশ। দিল্লি এবং পঞ্জাব পুলিশের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করে তারা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ৭ জানুয়ারি দিল্লির নারাইনা ফ্লাইওভারের কাছাকাছি এলাকায় ফাঁদ পাতে পুলিশ। ভোর পৌনে চারটে নাগাদ ২ সঙ্গী-সহ মহম্মদকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, জেরায় মহম্মদ স্বীকার করেছেন, বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য বিত্তবান এলাকায় অপারেশন চালাতেন তিনি। টাকা-গয়না চুরি করে তা দিয়ে দামি গাড়ি কেনাই ছিল তাঁর শখ। মহম্মদের কাছে রয়েছে জাগুয়ার, নিসান তিয়ানা এবং স্করপিও-র মতো দামি গাড়ি। সেগুলো সম্প্রতিই কিনেছিলেন বলে তিনি জানিয়েছেন পুলিশকে।
দেশ জুড়ে তাঁর নেটওয়ার্ক ছড়ানো রয়েছে বলে জেরায় স্বীকার করেছেন মহম্মদ। বিত্তবান এলাকায় ফাঁকা বাড়ি পেলেই সেখানে হানা দিয়ে লুঠ করতেন টাকা-গয়না। সম্প্রতি দিল্লিতে এসেছিলেন চুরির উদ্দেশ্যে। করোনার কারণে যে হেতু অধিকাংশ মানুষ এখন বাড়িতেই থাকছেন বেশির ভাগ সময়, তাই এ যাত্রায় চুরি করা সম্ভব হয়নি বলেও দাবি তাঁর। নারাইনা ফ্লাইওভারের কাছে একটি বিত্তবান এলাকায় চুরি করতে গিয়েই শেষমেশ পুলিশের ফাঁদে পড়লেন ‘রবিনহুড উজলা’।