নিতিন গড়কড়ি।
আমলাদের কাজ আসলে কী? কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গড়কড়ি তা একেবারে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিলেন। একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, দেশ চালানো আমলাদের কাজ নয়। সে কাজ মন্ত্রীরা করবেন। আমলাদের কাজ হল শুধু ‘জো হুজুর’ বলা। তাঁদের একটাই দায়িত্ব— মন্ত্রীরা যা বলছেন, সেই নির্দেশ বিনা বাক্যব্যয়ে পালন করা।
আমলারা হলেন দেশের আইএএস এবং আইপিএস আধিকারিক। প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীদের ব্যক্তিগত সচিব পদের পাশাপাশি প্রশাসনিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করা হয় এঁদের। বস্তুত জনগণের সঙ্গে সরকারের সংযোগের সুতোও এঁরাই। কারণ জেলাশাসক পদেও নিয়োগ করা হয় আমলাদেরই। তাঁদের কাছেই আসে আমজনতার সমস্যার খবরাখবর। নিতিন যদিও বলেছেন, ‘‘আমি সব সময় অফিসারদের (আমলাদের) বলি যে, সরকার আপনাদের কথামতো চলবে না।’’
সড়ক পরিবহণ এবং জাতীয় সড়ক সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন মঙ্গলবার নাগপুরের একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। সেখানেই তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মন্ত্রীদের হুকুম তামিল করাই আমলাদের একমাত্র কাজ। নিতিন বলেন, ‘‘আপনাদের শুধু বলতে হবে ‘ইয়েস স্যর’। আর আমরা (মন্ত্রীরা) যা বলছি তা বিনা বাক্যব্যয়ে কার্যকর করতে হবে। কারণ সরকার আমাদের কথায় চলে।’’
কিসের প্রেক্ষিতে নিতিনের এই বক্তব্য তা খুব একটা স্পষ্ট নয়। নিতিন অবশ্য একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। প্রায় ২৭ বছর আগের একটি ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ১৯৯৫ সালে গাদরিচোলি এবং মেলঘাট গ্রামে হাজার হাজার শিশুর অপুষ্টিতে মৃত্যু হয়েছিল। পরে জানা যায় সেই গ্রামে কোনও সড়কপথ ছিল না। বন মন্ত্রকের আইন সড়ক তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করছিল। নিতিন বলেন, ‘‘দরিদ্রদের কল্যাণকল্পে যদি কোনও কাজ করার দরকার থাকে, তবে কোনও আইন তাতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।’’ এ প্রসঙ্গে মহাত্মা গাঁধীর একটি উক্তির উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘গাঁধীজি বলেছিলেন, যে আইন দরিদ্রদের কল্যাণে বাধা দেয়, তা প্রয়োজনে ১০ বার ভাঙতে হবে। কথাটা আমাদের মনে রাখতে হবে।’’
যদিও সাম্প্রতিক অতীতে কোনও আমলার মন্ত্রীর নির্দেশ পালন না করার কোনও ঘটনা ঘটেছে কি না, তা নিতিনের বক্তৃতায় জানা যায়নি।