তখনও বর বেশে বসে আছেন অশোক যাদব।তখনও বর বেশে বসে আছেন অশোক যাদব।
ছাদনাতলায় বসে বর। বাজছে সানাই। নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করতে হাজির অতিথিরাও। শুধু কনের আসার অপেক্ষা!
হঠাৎ বিয়ে বাড়ির সামনে এসে থামল একটি এসইউভি গাড়ি। নামলেন এক তরুণী। হাতে রিভলভার। সঙ্গে দুই সশস্ত্র যুবক। গাড়ি থেকে নেমে তরুণী সোজা গিয়ে দাঁড়ালেন বরের সামনে। তাঁর কপালে রিভলভার ঠেকিয়ে অতিথিদের সামনে দিয়েই তাঁকে গাড়িতে তুলে নিয়ে ধুলো উড়িয়ে পগার পার!
কোনও ছবির দৃশ্য নয়। বাস্তবে এই ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তরপ্রদেশের হামিরপুর জেলার মৌদহা শহর।
বলিউডি ছবিতে হামেশাই দেখানো হয়, ছাদনাতলা থেকে কপালে বন্দুক ঠেকিয়ে কনেকে নিয়ে পালানোর ঘটনা। তবে বাস্তবের এই ঘটনা হার মানিয়েছে সেই একঘেয়ে চিত্রনাট্যকেও। ফিল্মি কায়দায় এ বার বরকে নিয়ে পালিয়েছেন এক তরুণী।
পুলিশ জানায়, অশোক যাদব নামে ওই যুবক এক ডাক্তারের ক্লিনিকে কাজ করতেন। সেখানে কাজ করতেন ওই তরুণীও। কয়েক মাসের আলাপ গড়ায় প্রেমে। সব কিছু দিব্যি চলছিল। কিন্তু বাদ সাধে অশোকের পরিবার। তাঁর বাড়ির লোক তাঁর বিয়ে ঠিক করে হামিরপুরের ভারতী যাদবের সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে বাগদান পর্ব সারা হতেই অশোক প্রেমিকার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ করে দেন। প্রেমিকার ফোনের জবাবও দিতেন না অশোক।
প্রেমিকের অন্যত্র বিয়ের কথা জানতে পেরে ওই তরুণী আর দেরি করেননি। মঙ্গলবার রাতে সটান প্রেমিকের বিয়ের মণ্ডপে হাজির হন তিনি। প্রেমিকের কপালে রিভলভার ঠেকিয়ে বলেন, ‘‘আমাকে ভালবেসে তুমি অন্য কাউকে বিয়ে করবে? এটা আমি মেনে নিতে পারব না।’’ তার পরেই প্রেমিকের কলার ধরে গাড়িতে তুলে নিয়ে পালান ওই তরুণী।
এমন নাটকীয় দৃশ্যের খানিক পরে ঘোর কাটে বিয়েবাড়ির লোকজনের। ভেঙে পড়েন সদ্য বিয়ে ভেঙে যাওয়া ভারতীও। শুধু বলছেন, ‘‘এমন যেন কারও সঙ্গে না ঘটে।’’ পুলিশে ‘বর অপহরণের’ অভিযোগ দায়ের করেছেন কনের বাড়ির লোকেরা। পুলিশের দাবি, ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত বলেই মনে হচ্ছে। অশোকের ভাই ও কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ কনের পরিবারকে আশ্বাস দিয়েছে, অশোককে খুঁজে বার করা হবে। তবে তাঁরা অশোকের প্রেমিকার তারিফ না করেও থাকতে পারছেন না। অনেকেই আবার তাঁর মিল খুঁজে পাচ্ছেন ‘রিভলভার রানি’র সঙ্গে! ছবির পর্দায় যিনি বন্দুক ছুড়তে ছুড়তে এসে ‘উদ্ধার’ করেছিলেন প্রেমিককে।