বেআইনি ভাবে গড়ে ওঠা বহুতল গুঁড়িয়ে দিচ্ছে বুলডোজ়ার। মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুতে। পিটিআই
বেআইনি দখলদার উচ্ছেদে কর্নাটকে এ বার চলল বুলডোজ়ার। কয়েক দিন আগেই প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল বেঙ্গালুরু। জল উপচে গিয়েছিল বহু জায়গায়। তার পরেই প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিল প্রশাসন। সেই বিষয়টিকে মাথায় রেখে এ বার বেআইনি দখল উচ্ছেদে তৎপর হল বৃহৎ বেঙ্গালুরু মহানগর পালিকে (বিবিএমপি)। বৃষ্টির অতিরিক্ত জল নিকাশীর জন্য তৈরি স্টর্মওয়াটার ড্রেনের উপরে অবৈধ ভাবে নির্মিত প্রায় ৭০০ নির্মাণ ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করেছে পুরসভা। গতকাল থেকেই শুরু হয়েছে উচ্ছেদ অভিযান।
গতকাল মহাদেবপুরা অঞ্চলে গোপালন আন্তর্জাতিক স্কুলের খেলার মাঠ খুঁড়ে দেওয়া হয়েছিল। মহাদেবপুরা, বেল্লান্ডুর, হুডি-র মতো অঞ্চলে এমন অন্তত ১৫টি নির্মাণ চিহ্নিত করা হয়েছে। আজও উচ্ছেদ অভিযান চলেছে। মহাদেবপুরার বিধায়ক অরবিন্দ লিম্বাভলী জানিয়েছেন, ইয়ামালুরে এপসিলন ভিলা, মুন্নেকোলাল অঞ্চলে শান্তিনিকেতন লেআউট, ইকো স্পেসে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। চাল্লাগাট্টা অঞ্চলে নালাপাড অ্যাকাডেমিতেও সেই কাজ শুরু হবে। উচ্ছেদ অভিযানের ভিডিয়োও পোস্ট করেছেন তিনি।
তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার মধ্যে উইপ্রোর অফিস, বাগামানে টেক পার্ক, পূর্ব প্যারাডাইস, রেনবো ড্রাইভ লে আউট এবং ইকোস্পেসে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে। অন্য দিকে অভিজাত আবাসনের মধ্যে রয়েছে দিব্যশ্রী, এপসিলন। অভিযোগ উঠেছে রামাগোন্ডানাহাল্লি-তে কলম্বিয়া এশিয়া হাসপাতাল নিয়েও।
তবে এই অভিযানের মধ্যেই তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলিকে নিশানা করে বিতর্কে রাজস্বমন্ত্রী আর অশোক। তাঁর মন্তব্য, ৩০টিরও বেশি তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা স্টর্মওয়াটার ড্রেনের উপরে বেআইনি ভাবে নির্মাণ করেছে। উচ্ছেদ অভিযানে ধনী কিংবা গরিব কোনও বিভাজন চলবে না। সমস্ত বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে হবে। কাউকে রেয়াৎ করা হবে না।
এর পরেই আসরে নামেন অশোকের সতীর্থ লিম্বাভলী। তিনি জানান, অশোক যা বলেছেন ঠিক নয়। তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলি কোনও ভুল করেনি। এ ক্ষেত্রে দোষী নির্মাতারা।
প্রবল সমালোচনায় মুখরক্ষা করতেই কি উচ্ছেদ অভিযান নিছক কথার কথা? এই প্রশ্নের উত্তরে পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শ্রীনিবাসও জানান, কাউকেই ছাড়া হবে না। তারই অংশ হিসাবে গোপালন আন্তর্জাতিক স্কুলে পদক্ষেপ করা হয়েছে। স্কুলের তরফে অবশ্য বেআইনি দখলের অভিযোগ খারিজ করা হয়েছে।
ওই স্কুলের ১০০ মিটারের মধ্যেই রয়েছে মহাবীর অ্যাপার্টমেন্ট। ওই আবাসনের একাংশের নীচেও রয়েছে স্টর্মওয়াটার ড্রেন। এই আবাসনেও একই পদক্ষেপের বার্তা দিয়েছে পুরসভা। যদিও আবাসনের বাসিন্দারা এ ক্ষেত্রে প্রশাসন এবং নির্মাতার বেআইনি কার্যকলাপের উপরেই দায় চাপিয়েছেন। তাঁদের প্রশ্ন নির্মাণে অসঙ্গতি থাকলে অনুমতি দেওয়া হল কেন? প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার বার্তা দিয়েছেন আবাসিকেরা।
শান্তিনিকেতন লেআউটের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেছে বেছে গরিবদেরই নিশানা করা হচ্ছে। অন্য দিকে অভিজাত আবাসন এবং তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
গতকালই মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই জানিয়েছিলেন, স্টর্মওয়াটার ড্রেনের উপরে যে সমস্ত বেআইনি নির্মাণ রয়েছে, সেই সবই গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। তার পরেই অভিযানে সক্রিয় বুলডোজ়ার।