—ফাইল চিত্র।
কর্নাটকে কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকার পতনের পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল সেই সময়েই। ওই ঘটনাকে ‘অপারেশন কমল’ বলে অভিহিতও করা হয়েছে। এ বারে সামনে এল, ‘অপারেশন কমল’-এর পিছনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা দলীয় সভাপতি অমিত শাহের ভূমিকার কথা। একটি ফাঁস হওয়া ভিডিয়ো টেপে রাজ্যের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভূমিকার কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, অমিত শাহ নিজে বিদ্রোহী বিধায়কদের (পরে যাঁদের সদস্যপদ খারিজ করা হয়) তত্ত্বাবধান করেছেন এবং মুম্বইয়ে তাঁদের রাখার সব ব্যবস্থা করেছিলেন।
এ বছর জুলাইয়ে রাজ্যে জোট সরকারের পতনের পরে কংগ্রেস-জেডিএস-সহ বিরোধী নেতারা বারবার এর পিছনে বিজেপির ভূমিকার কথা বলেছেন। ফাঁস হওয়া টেপটি নিয়ে ফের আসরে নেমেছেন তাঁরা।
জোট সরকারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর অভিযোগ, বিজেপির সব অভিসন্ধি ফাঁস হয়ে গেছে। ফাঁস হওয়া ভিডিয়ো টেপের বক্তব্য অস্বীকার করেননি মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা নিজেও। টেপটির সত্যতাকে চ্যালেঞ্জও করেননি তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, বিজেপি নেতারা যাতে বিদ্রোহী বিধায়কদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না-করেন, তা বোঝাতেই ‘দলের স্বার্থে’ হুব্বলিতে বিজেপি কর্মীদের কাছে তিনি সব কথা বিশদে বলেছেন।
আরও পড়ুন: জম্মু-কাশ্মীরকে নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ৯টি, দেশের নয়া মানচিত্র প্রকাশ করল কেন্দ্র
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া টেপে শোনা গিয়েছে, ইয়েদুরাপ্পা দলীয় কর্মীদের বলছেন, মুম্বইয়ের পাঁচতারা হোটেলে বসে বিদ্রোহী বিধায়কদের দলের নির্দেশ অমান্য করে আস্থা ভোটে বিরত থাকার পুরো পরিকল্পনা অমিত শাহ জানতেন। ফাঁস হওয়া ওই টেপে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আপনারা তো জানেন, না জানেন না যে, ওদের এই সিদ্ধান্তের পিছনে ইয়েদুরাপ্পা ছিলেন না? জাতীয় সভাপতি এটা জানতেন এবং তিনি এর দেখভাল করেছেন এবং সব ব্যবস্থা করেছেন। আপনারা জানেন এটা? ১৭ জনের ওই সিদ্ধান্ত, ওঁদের দু’-তিন মাস ধরে মুম্বইয়ে থাকা, নিজেদের কেন্দ্রে এমনকি পরিবারের সঙ্গেও দেখা করতে যেতে না-পারা— এ সব কি আপনারা জানেন, না জানেন না? যাঁদের কথা ছিল বাকি মেয়াদটা বিরোধী বেঞ্চে বসার, সেই আমাদের ওঁরা অপ্রত্যাশিত ভাবে সাহায্য করেছেন। ওরা আমাদের শাসক দল হয়ে উঠতে সাহায্য করেছেন। বিধায়ক হিসেবে ওঁরা পদত্যাগ করেছেন, সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন। এ সব জেনে আমাদের উচিত, যা-ই হোক, ওঁদের পাশে দাঁড়ানো। কিন্তু আপনারা কেউ এটা বলেন না। আমি এটা আপনাদের থেকে আশা করিনি। আমি দুঃখিত। আমি তিন-চার বার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছি। এ সব দেখেছি। এখন মনে হচ্ছে, আমি মুখ্যমন্ত্রী হয়ে অপরাধ করে ফেলেছি!’’
স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টি নিয়ে সরব বিরোধীরা। রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি দীনেশ গুণ্ডু রাওয়ের বক্তব্য, ‘‘অপারেশন কমলের কথা ফের স্বীকার করল বিজেপি। ওরাই যে সবটা করিয়েছে, তার আর কি প্রমাণ দরকার?’’ বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করে ওই ‘বিদ্রোহে’ গদি হারানো প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী জানিয়েছেন, তিনি আদালতের দ্বারস্থ হবেন। ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কদের সদস্য পদ খারিজ করে দিয়েছিলেন বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার কে আর রমেশ কুমার। ওই ১৭ জনের কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে আগামী ৫ ডিসেম্বর। কিন্তু বরখাস্ত হওয়ার কারণে সেই ভোটে লড়তে পারবেন না ওঁরা। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই বিধায়কেরা।