চতুর্থবার কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন ইয়েদুরাপ্পা। ছবি: পিটিআই
লক্ষ্যপূরণ বিজেপির। কর্নাটকে চতুর্থ বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হলেন বি এস ইয়েদুরাপ্পা। বেঙ্গালুরুতে রাজভবনে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় রাজ্যপাল বাজুভাই বালা ইয়েদুরাপ্পাকে শপথবাক্য পাঠ করান। তবে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে তাঁকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে কর্নাটক বিধানসভায়। ইয়েদুরাপ্পা আত্মবিশ্বাসী, প্রয়োজনীয় সংখ্যা রয়েছে তাঁর কাছে।
কর্নাটকে বহুদিন ধরেই চলতি সরকারের স্থায়িত্ব এবং নতুন সরকার গঠন নিয়ে দোলাচল চলছিলই, কিন্তু এতদিন বিজেপি সরাসরি সরকার গঠনের দাবি জানায়নি। পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, তা নিশ্চিত হতে চেয়েছিল। আস্থা ভোটের পর জোট-সরকারের পতনের পরই কর্নাটকের ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে তা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায় বিজেপি শিবির। তাই আর দেরি না করে শুক্রবার সকালেই রাজ্যপাল বাজুভাই বালার সঙ্গে দেখা করে সরকার গঠনের দাবি জানান ইয়েদুরাপ্পা।
২২৫ আসন বিশিষ্ট (এক জন মনোনীত সদস্য) কর্নাটক বিধানসভায় বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ১০৫। এই মুহূর্তে, কর্নাটক বিধানসভায় দুই নির্দল বিধায়কের সমর্থন যোগ করে বিজেপির ঝুলিতে রয়েছে ১০৭টি আসন। যেখানে কংগ্রেস-জেডিএস জোটের ঝুলিতে গিয়েছে ৯৯ সমর্থন। এর মধ্যে স্পিকার রমেশ কুমার বৃহস্পতিবার রাতেই দলত্যাগ বিরোধী আইনে ১৭ জনের মধ্যে তিন জন বিক্ষুব্ধ বিধায়কের বিধানসভার সদস্যপদ খারিজ করে দিয়েছেন। তাঁরা হলেন কংগ্রেসের আর শঙ্কর এবং আরও দুই বিদ্রোহী বিধায়ক রমেশ জারকিহোলি ও মহেশ কুমথালি। ফলে তাঁরা আর বিধানসভার সদস্য রইলেন না। বিধানসভা ভেঙে দেওয়া না হলে ভোটেও লড়তে পারবেন না।
আরও পড়ুন: ‘সন্ত্রাসবাদের মতোই তিন তালাকও অপরাধ’, জানিয়ে দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার
তিন জনের সদস্যপদ খারিজের ফলে বিধানসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজন ১১১ জনের সমর্থন। নির্দল ও অন্য ছোট দলের সমর্থনে বিজেপি সরকার গড়লেও পরবর্তী সময়ে বিদ্রোহী বিধায়কদের ভূমিকা বিজেপির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। কারণ এঁরা কুমারস্বামীকে সরালেও এঁদের অধিকাংশ কিন্তু কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়ার ঘনিষ্ঠ। ফলে বিদ্রোহী বিধায়কদের ইস্তফা অথবা সদস্যপদ খারিজ নিয়ে স্পিকারের সিদ্ধান্তের উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে বিজেপির কাছে। এই বিধায়কদের সঙ্গে কংগ্রেসের ফের যোগাযোগের সম্ভাবনাও খারিজ করতে পারছে না বিজেপি। এ ছাড়া, কর্নাটক মামলা এখনও সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন। এ সব সমীকরণের কথা মাথায় রেখেই কিছুটা দোলাচলেও রয়েছে কর্নাটকের বিজেপি শিবির। কারণ শপথ নেওয়ার পর স্পিকারের দেওয়া সময়সীমার মধ্যে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতাও প্রমাণ করতে হবে বিধানসভায়।
আরও পড়ুন: মনুয়া ও তার প্রেমিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, অনুপম হত্যার সাজা ঘোষণা করল বারাসত আদালত
২০১৮ সালের ১২ মে কর্নাটকে বিধানসভা ভোট হয়। সেই ভোটে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠাতে পেলেও, নিরঙ্কুশ জয় পায়নি। এর আগে কর্নাটকে কংগ্রেসের সরকার ছিল। কিন্তু গত বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের আসন অনেকটাই কমে যায় (১২২ থেকে কমে দাঁড়ায় ৮০)। ফলে জেডিএসের সঙ্গে জোট সরকার গঠন করে কংগ্রেস। কংগ্রেসের সংখ্যা বেশি থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী হন জেডিএসের এইচডি কুমারস্বামী।
আরও পড়ুন: ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল ফুটবলার হওয়ার, সোনার মেয়ে আজ দেশের সেরা অ্যাথলিট
কিছুদিন আগে এই জোটের ১৫ জন বিধায়ক ইস্তফাপত্র জমা দেন স্পিকারের কাছে। সেই ইস্তফাপত্র এতদিন স্পিকার গ্রহণ করেননি। আস্থা ভোট নিয়েও টানাপড়েন চলছিল। মঙ্গলবার আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় কংগ্রেস-জেডিএস জোট। একক ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হয়ে ওঠে বিজেপি।