বি এস ইয়েদুরাপ্পা।
ঘোষণা হয়েছিল দেওয়া হবে। এ বার বলছেন দেব না! গত ১৯ ডিসেম্বর সংশোধিত নাগরিক আইন (সিএএ)-বিরোধী বিক্ষোভের সময় পুলিশের গুলিতে ২ জনের মৃত্যু হয়েছিল মেঙ্গালুরুতে। রাজ্যের বিজেপি সরকার ক্ষতিপূরণ হিসেবে নিহতদের নিকটাত্মীয়কে হাতে ১০ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে দেয় তড়িঘড়ি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে আজ জানিয়ে দিলেন, ওই টাকা আদৌ দেওয়া হবে না।
ইয়েদুরাপ্পার যুক্তি, মেঙ্গালুরুতে দাঙ্গা বাধানোর চক্রান্ত হয়েছিল। তদন্তে উঠে এসেছে, পুলিশকে ছোড়ার জন্য গাড়িতে করে পাথর আনা হয়েছিল। কিছু লোক থানায় পুলিশের অস্ত্রভাণ্ডারেও হানা দেয়। ফলে এটা এখন স্পষ্ট, নিরাপরাধ লোক মারা যায়নি। পুলিশের গুলিতে দুষ্কৃতীদের মৃত্যু হয়েছে। ইয়েদুরাপ্পার তাই সাফ কথা, ‘‘অপরাধীদের মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ দেওয়াটাও অপরাধ।’’
বিল পাশের পরই অতি দ্রুত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মাথা তোলায় কেন্দ্র ও বিভিন্ন রাজ্যের বিজেপি সরকার দৃশ্যতই কিছুটা হতচকিত হয়ে পড়েছিল। এতটা প্রতিক্রিয়া হবে সেটা আঁচ করা যায়নি, এমনও বলেছিলেন শাসক শিবিরের লোকজন। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে বিজেপির নেতা-মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীরা পাল্টা আক্রমণাত্মক হচ্ছেন সিএএ বিরোধীদের প্রতি। বিক্ষোভকারীদের ‘দাঙ্গাবাজ’ আখ্যা দিয়ে, তাদের পোশাকের প্রসঙ্গ তুলে বিশেষ সম্প্রদায়কে নিশানা করছেন। নিশানায় নকশালরাও। এরই পরবর্তী পর্যায়ে উঠে এল চক্রান্তের অভিযোগ।
ইয়েদুরাপ্পা গত কাল কেরল থেকে ফিরে রাতে ও আজ দফায় দফায় পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আর তার পরেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের কথা জানিয়ে দেন সাংবাদিকদের জানিয়ে দেন। আরও জানান, যারা আগুন লাগিয়েছে, গুন্ডামি করেছে, তাদের গ্রেফতার করে আইনি পদক্ষেপ করতে বলেছেন পুলিশকে। মেঙ্গালুরুতে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইকে দায়ী করছেন বিরোধীরা। এই প্রসঙ্গ তোলা বলে ইয়েদুরাপ্পা বলেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। মগজ যখন কাজ করে না, তখন এমন বলে থাকে লোকে। আর কোনও বিষয় না পেয়ে বিরোধীরা এই বিষয়টাকে আঁকড়ে ধরেছেন।’’
মেঙ্গালুরুতে পুলিশের গুলি চালানো নিয়ে কেরলে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন ইয়েদুরাপ্পা। কান্নুরে কিছু লোক তার কনভয়ে হামলা চালায়। যদিও ইয়েদুরাপ্পার কিছু হয়নি।