সেনার গুলিটা যখন উত্তপ্ত কাশ্মীরের রাস্তায় নইমের জীবনটা কেড়ে নিল তখনও তাঁর বাড়ির দেওয়াল জুড়ে সচিন, কোহলি, দ্রাবিড়দের ছবিগুলো কথা বলছিল। ওঁদের মতোই এক দিন ভারতীয় সিনিয়র দলের জার্সিতে খেলতে চেয়েছিলেন এই কাশ্মীরি যুবক। সেই স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল মঙ্গলবার বিকেলে। ছেলের নিথর দেহ নিয়ে পুলিশ স্টেশনে হতভম্ব বসে ছিলেন নইম কাদির ভাটের বাবা। বাড়িতে বসে তখন নইমের মা বলছিলেন, ‘‘কেউ ওর বাবাকে গিয়ে বলবে আমার গাওস্করকে ফিরিয়ে আনতে।’’ ছেলে ফেরেনি। জীবনের সঙ্গে শেষ হয়ে গিয়েছে একজন ক্রিকেটারের স্বপ্নও। জম্মু-কাশ্মীরের হয়ে স্কুল ক্রিকেট খেলেছেন। খেলেছেন অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটেও। তিন বছর আগে জায়গা করে নিয়েছিলেন সর্বভারতীয় কোচিং ক্যাম্পে।
শ্রীনগর থেকে ৬৯ কিলোমিটার দুরের হান্দওয়াড়া মঙ্গলবার বিকেলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে একজন স্কুল ছাত্রীর শ্লীলতাহানি নিয়ে। গুজব ছড়িয়ে পরে কোনও সেনা জওয়ান সেই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেছে। যদিও পরে ওই ছাত্রী পুলিশকে বলেছেন, কোনও জওয়ান তাঁর শ্লীলতাহানি করেনি। কিন্তু মঙ্গলবার গুজব ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের উপর চরাও হন স্থানীয় কিছু যুবক। ওই সময় ওখান দিয়েই যাচ্ছিলেন কাশ্মীরের এই উদীয়মান ক্রিকেটার। গোলমাল দেখে দাঁড়িয়ে পরেন। মোবাইলে ছবিও তুলছিলেন ঘটনার। সেই সময়ই গুলি এসে লাগে তাঁর গায়ে। সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন নইম। মৃত্যু হয়েছে আরও দুই নিরীহ পথচারীর।
কাশ্মীর থেকে উঠে এসে জাতীয় দলের জার্সিতে খেলেছেন পরভেজ রসুল। তাঁর সঙ্গে নিজের দেওয়াল জোড়া পোস্টার সাইজ ছবিটা নইমের বাড়ির দেওয়ালে এখনও আছে। এ ছবি একটা স্বপ্নের প্রতীক। আমিও খেলব দেশের হয়ে। স্বপ্নটা শেষ হয়ে গেল। স্বপ্নের ঊর্ধ্বে চলে গেলেন তিনি। রয়ে গেলেন বাবা-মা, ওঁদের স্বপ্নের গাওস্কর আর কোনওদিন নামবে না মাঠে।
আরও খবর
হার্টের জটিল সমস্যায় ক্রিকেটকে বিদায় টেলরের