Brij Bhushan Sharan Singh

মুখ খুললেই ‘বিদ্রোহী’ তকমা, বিজেপি নেতার দাবি

যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে বিজেপির ছ’বারের নির্বাচিত সাংসদের এই মন্তব্যে রাজ্য সরকার কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছে বলে মত রাজনীতিকদের একাংশের।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লখনউ শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২২ ০৮:৪৪
Share:

ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ।

উত্তরপ্রদেশের সাম্প্রতিক বন্যায় বিধ্বস্ত এলাকার বাসিন্দাদের ‘ঈশ্বরের ভরসায়’ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করলেন বিজেপিরই সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ। সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘সমালোচনা করলেই বিদ্রোহী তকমা জুটবে।’’ যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে বিজেপির ছ’বারের নির্বাচিত সাংসদের এই মন্তব্যে রাজ্য সরকার কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছে বলে মত রাজনীতিকদের একাংশের।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশে সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে রাজ্যের কয়েকটি এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। নিজের কেন্দ্র কাইসারগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করার সময়ে ব্রিজভূষণ বলেন, ‘‘বন্যা সামলানো ও ত্রাণের ক্ষেত্রে এমন অব্যবস্থা আমি আগে দেখিনি। এখন আবার সমালোচনাও করা যায় না। কারণ সমালোচনা করলেই বিদ্রোহী তকমা দেওয়া হবে।’’

ব্রিজভূষণের কথায়, ‘‘আমরা নিজেদের মনের কথা প্রকাশ করতে পারি না। এটা খুবই দুঃখজনক। কথা বলা যাবে না। কেবল শুনতে হবে। জনপ্রতিনিধিদের মুখ বন্ধ। মতামত দিলে কেউ শুনবেন না।’’ কাইসারগঞ্জের পরিস্থিতির জন্য সরাসরি জেলা প্রশাসনকে দায়ী করেছেন ব্রিজভূষণ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আগে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বন্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বৈঠক করা হত। তাঁদের সব বিষয় জানানো হত। জেলা প্রশাসনও এ বার তেমন উদ্যোগী হয়নি।’’ বন্যায় সরযূ নদীর উপরে সেতু ধ্বংস হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্রিজভূষণের নিজের গ্রাম। তাঁর কথায়, ‘‘সরযূ নদীর উপরে ওই সেতু রক্ষার জন্য গত ২ বছরে আমি প্রশাসনকে অন্তত ১০টি চিঠি লিখেছি।’’

Advertisement

গত কাল যোগীকে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধী। বন্যার মধ্যেও রাজ্যে উত্তরপ্রদেশ সাবঅর্ডিনেট সার্ভিস সিলেকশন কমিটির পরীক্ষা নেওয়া নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। বিভিন্ন এলাকায় ট্রেন ও স্টেশনে গাদাগাদি ভিড়ের ছবি টুইটারে পোস্ট করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘উত্তরপ্রদেশ বন্যার কবলে পড়েছে। তার মধ্যেই পরীক্ষা দিয়েছেন ৩৭ লক্ষেরও বেশি পরীক্ষার্থী। তাঁদের কাছে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেয়ে বড় সমস্যা পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনো।’’ সম্প্রতি আকাশপথে বন্যা পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন যোগী। বরুণের কটাক্ষ, ‘‘হয়তো আকাশপথে ঘুরে দেখলে মাটির সমস্যা টের পাওয়াযায় না।’’

রাজনীতিকেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, উত্তরপ্রদেশে যোগীর বিরুদ্ধে বিজেপির অন্দরে আগেও ক্ষোভ দেখা গিয়েছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত প্রাক্তন আমলা এ কে শর্মাকে উত্তরপ্রদেশ বিজেপির সহ-সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিজেপি সূত্রের মতে, তাঁর সঙ্গে বিস্তর টানাপড়েন হয়েছে যোগীর। শেষ পর্যন্ত অবশ্য মন্ত্রিসভায় স্থান হয়েছে শর্মার। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যোগীর দ্বিতীয় ইনিংসে আমলাদের বদলি, সাসপেনশন ও অন্য নানা বিষয় নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন উপমুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক-সহনানা মন্ত্রী।

জুলাই মাসে তাঁর অনুপস্থিতিতে স্বাস্থ্য দফতরের অফিসারদের বদলির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন উপমুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক। বদলি নীতি ভঙ্গ করা নিয়ে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অমিত মোহনের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন ব্রজেশ। বিতর্ক সামলাতে তিন জনের কমিটি তৈরি করেছিলেন যোগী। আবার পূর্তমন্ত্রী জিতিন প্রসাদের দফতরে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে এক অফিসার-অন-স্পেশাল ডিউটি-সহ পাঁচ জন অফিসারকে সাসপেন্ড করেছিলেন যোগী।

বিষয়টি নিয়ে তখন সরকারকে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছিল। সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব বলেছিলেন, ‘‘মন্ত্রীদের একাংশ যে নিজেদের অসন্তোষের কথা প্রকাশ্যে জানাচ্ছেন তাতে আমি খুশি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement