ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ। —ফাইল চিত্র।
দেশের প্রথম সারির মহিলা কুস্তিগিরেরা সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করলেও ব্যবস্থা নেয়নি বিজেপি। এ বার বিতর্কের শীর্ষে থাকা সেই সাংসদ ব্রিজভূষণ দাবি করলেন, কুস্তিগিরদের ভূমি হরিয়ানার নাকি মানুষ তাকে চাইছে। ফলে তাঁর দল বিজেপি যদি চায়, সেক্ষেত্রে লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশ কয়সরগঞ্জ আসন ছেড়ে হরিয়ানায় গিয়ে লড়তে পারেন তিনি।
কয়সরগঞ্জে বিজেপির একটি জনসভায় গতকাল ব্রিজভূষণ বলেন, ‘‘হরিয়ানার মানুষের থেকে আমি অনেক সমর্থন পাচ্ছি। বিশেষ করে জাঠ সম্প্রদায়ের মানুষেরা আমাকে চাইছেন।’’ এ সঙ্গেই ভারতের কুস্তি ফেডারেশনের প্রাক্তন কর্তার মন্তব্য, ‘‘অনেকেই আমার সঙ্গে দেখা করে বলছেন, আপনি হরিয়ানায় এসে ভোটে লড়ুন। আমাদের এলাকা থেকে আপনাকে জিতিয়ে দেবো।’’
এ বছরের শুরুতে সাত জন মহিলা কুস্তিগির ভারতের কুস্তি ফেডারেশনের কর্তা ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনলে দেশ জুড়ে আলোড়ন শুরু হয়। এই কুস্তিগিরদের মধ্যে এক জন নাবালিকা। এপ্রিল মাসের শেষ বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। জুলাই মাসে দিল্লির একটি আদালত অবশ্য তাকে আগাম জামিন দিয়ে দেয়।
দলের সাংসদকে শাস্তি দিতে মহিলা কুস্তিগিরদের বিক্ষোভ, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির চাপের মধ্যেও বিজেপি কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তবে এই সময়ে বিক্ষোভ কিছুটা থিতিয়ে যেতেই ব্রিজভূষণ দাবি করে বসলেন, হরিয়ানার মানুষ তাকে চাইছে। অথচ তার বিরুদ্ধে দিল্লির যন্তর মন্তরের ধর্নায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যাঁরা, প্রথম সারির সেই তিন কুস্তিগির— সাক্ষী মালিক, বিনেশ ফোগট ও বজরঙ্গ পুনিয়ারা হরিয়ানারই বাসিন্দা।
তবে ব্রিজভূষণের হঠাৎ উত্তরপ্রদেশ ছেড়ে হরিয়ানায় ভোটে লড়তে চাওয়ার পিছনে বিজেপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতি কাজ করছে বলে অনেকে মনে করছেন। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বুলডোজ়ার নীতির বিরোধিতা করে মন্তব্য করেন দলের সাংসদ ব্রিজভূষণ। যোগীর সঙ্গে দূরত্ব যখন সামনে চলে এসেছে, সেজন্যই কি বিতর্কিত সাংসদ অন্য রাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইছেন— রাজনীতির অঙ্গনে সেই প্রশ্নও উঠেছে।