—প্রতীকী চিত্র।
বন্ধ ঘরের একান্তে ছাত্রকে নিয়মিত যৌন হেনস্থা করতেন গৃহশিক্ষক। পড়ানোর নামে দিনের পর দিন চলত শারীরিক অত্যাচার। ১৪ বছরের কিশোর অবশেষে ধৈর্য্য হারাল। দিন কয়েক আগে বিশেষ ক্লাস করানোর নামে দুপুর বেলায় নিজের বাড়িতে ছাত্রটিকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন শিক্ষক। ছাত্রটি সেখানে যথাসময়ে হাজির হয় একটি কাগজ কাটার ছুরি নিয়ে।
পুলিশের কাছে খবর আসে গত ৩০ অগস্ট দুপুর সোয়া ২টো নাগাদ। দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির জামিয়ানগর এলাকার থানায় ওই ফোনে জানানো হয়, ‘‘বাটলা হাউসের তিনতলার একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে রক্ত বেরিয়ে আসছে বাইরে। ওই অ্যাপার্টমেন্টে ঢোকার দরজাটিও খোলা।’’ দক্ষিণ পূর্ব দিল্লির ডিসিপি জানিয়েছেন, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশের একটি দল। দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে তারা দেখতে পায়, মেঝেতে পড়ে রয়েছে এক যুবকের নিথর দেহ। তাঁর গলায় গভীর ক্ষত। রক্তে ভেসে যাচ্ছে অ্যাপার্টমেন্ট। পরে শুক্রবার এই ঘটনায় এক ১৪ বছরের কিশোরকে আটক করে পুলিশ। তারা জানতে পারে, ওই কিশোর মৃত যুবকের ছাত্র। ঘটনার দিন দুপুরে গৃহশিক্ষকের ডাকে তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে এসেছিল সে।
পুলিশ এই ঘটনায় একটি খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে। তবে তদন্ত যত এগোয়, তত বিস্মিত হতে শুরু করে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ওই ছাত্রের উপর হওয়া অত্যাচারের কথা। কী ভাবে তার সমকামী শিক্ষক ছাত্রের উপর দিনের পর দিন শারীরিক অত্যাচার চালিয়েছেন। দু’মাস আগে ওই ছাত্রকে পড়ানো শুরু করেছিলেন ওই গৃহশিক্ষক। তার পর থেকেই নিয়মিত চলেছে অত্যাচার।
পুলিশ জেনেছে, ওই ছাত্রের একান্ত মুহূর্তের একটি আপত্তিকর ভিডিয়োও তুলেছিলেন ওই শিক্ষক। সেই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়েই চালানো হত অত্যাচার। কিন্তু বেশিদিন এই হেনস্থা সহ্য করতে পারেনি ওই কিশোর। বিহিত করতে শিক্ষকের ডাক পেয়ে তাঁর বাড়িতে কাগজ কাটার ছুরি নিয়ে হাজির হয় সে। ঘনিষ্ঠতার মুহূর্তে সজোরে শিক্ষকের গলায় চালিয়ে দেয় সেই ছুরি।
পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই শিক্ষকের বয়স ২৮। দক্ষিণ পূর্ব দিল্লির জাকিরনগরে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন তিনি। তবে জামিয়ানগরেও একটি এক কামরার ফ্ল্যাট ছিল তাঁর। সম্প্রতিই সেই ফ্ল্যাট থেকে ভাড়াটিয়ারা চলে যাওয়ায় সেখানে ছাত্রকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন শিক্ষক। সেই ফ্ল্যাট থেকেই পাওয়া যায় তাঁর দেহ।