কিডনি বিক্রির সিদ্ধান্ত কিশোরের। প্রতীকী ছবি।
বাবা অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। পরিবার বলতে সে আর মা। বাবার মৃত্যুর পর থেকেই তার দেখাশোনা করতেন মা। ফলে শৈশব থেকেই দীপাংশুর জগৎ মাকে ঘিরেই। একটু বড় হতেই সংসারের হাল ধরতে এবং মাকে সাহায্য করতে দোকানে কাজ নেয় সে।
কষ্টেসৃষ্টে দিন চলছিল তাদের। দোকান থেকে যা আয় হত, তা মায়ের কাছে পাঠিয়ে দিত দীপাংশু। গয়ার তাদের বাড়ি। কিন্তু কাজের জন্য রাঁচীতে থাকতে হয় দীপাংশুকে। হঠাৎ তার কাছে খবর পৌঁছয় মায়ের পা ভেঙে গিয়েছে। মায়ের দুর্ঘটনার খবর শুনে ভেঙে পড়ে দীপাংশু। হাতে টাকাপয়সা নেই। কী ভাবে মায়ের চিকিৎসা করবে, তা ভেবেই দিশাহারা হয়ে পড়েছিল সে।
কিন্তু মায়ের চিকিৎসা যে করাতেই হবে তাকে! তাই আর সাতপাঁচ না ভেবে বেরিয়ে পড়েছিল সে। রাঁচীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে হাজির হয় দীপাংশু। নিজের কিডনি বিক্রি করার জন্য খদ্দের খুঁজছিল সে। কিডনি বিক্রি করে সেই টাকায় মায়ের চিকিৎসা করাবে বলে স্থির করেছিল দীপাংশু। হাসপাতালের বাইরে ঘুরঘুর করতে দেখে এক কর্মী এগিয়ে এসে তাঁকে জিজ্ঞাসা করে, কেন এখানে ঘুরঘুর করছে সে। তখন দীপাংশু জানায়, সে তার একটি কিডনি বিক্রি করতে চায়। এই কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন হাসপাতালের ওই কর্মী। কেন কিডনি বিক্রি করতে চায়, এ প্রশ্নের উত্তর শুনে ওই কর্মী বিষণ্ণ হয়ে পড়েছিলেন। দীপাংশু জানিয়েছিল মায়ের চিকিৎসা করাতেই এই সিদ্ধান্ত। এর পরই ওই কর্মীকে একটি খদ্দের জোগাড় করে দেওয়ার জন্য আকুতি করতে থাকে সে।
দীপাংশুর মুখে এ কথা শুনে হাসপাতালেরই এক চিকিৎসক বিকাশ কুমারকে বিষয়টি জানান ওই কর্মী। চিকিৎসক তখন দীপাংশুর সঙ্গে দেখা করেন এবং তাঁর মাকে রাঁচী রিমসে নিয়ে আসার পরামর্শ দেন। সেখানেই তার মায়ের চিকিৎসা বিনা পয়সাতেই করানো হবে বলে আশ্বাস দেন চিকিৎসক।