আইনের অপব্যবহারের অভিযোগ মহিলার বিরুদ্ধে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
স্বামী নাকি মহিলার উপর অত্যাচার করতেন। তা নিয়ে থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগও জানান মহিলা। পরে আবার নিজেই স্বীকার করে নেন, স্বামীর আচরণ শোধরানোর জন্য তিনি ওই মিথ্যা মামলা করেছিলেন। মহিলার এই আচরণ স্বামীর প্রতি নিষ্ঠুরতা বলে মনে করছে বম্বে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
মহারাষ্ট্রের ওই দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদের নির্দেশ দেয় ঠাণের এক পারিবারিক আদালত। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন মহিলা। সম্প্রতি বিচারপতি জিএস কুলকর্নি এবং বিচারপতি অদ্বৈত সেঠনার বেঞ্চ মহিলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। স্বামীর প্রতি নিষ্ঠুরতার কারণে পারিবারিক আদালত সঠিক রায়ই দিয়েছে বলে মত হাই কোর্টের।
ওই মহিলা তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছিলেন। থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগও জানান। পরে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিচার শুরু হলে, নিজের ‘দোষ’ স্বীকার করে নেন মহিলা। তিনি জানান, ওই মিথ্যা মামলার উদ্দেশ্য ছিল স্বামীর আচরণ শুধরে নেওয়া। স্বামীকে শাস্তি ভোগ করানোর জন্য ওই মামলা তিনি করেননি। আইনের অপব্যবহার করে কে তাঁকে এ সবের পরামর্শ দিয়েছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে বিচার পর্বে। বরং এই ধরনের মিথ্যা মামলার জেরে স্বামীর আচরণ শোধরানোর বদলে তাঁর উপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে বলেও মনে করে আদালত। অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হওয়ায় স্বামীকে বেকসুর খালাস করে দেয় আদালত।
ওই ঘটনার রেশ ধরেই ঠাণের পারিবারিক আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন মহিলার স্বামী। স্বামীর উপর নিষ্ঠুরতার কারণে বিবাহবিচ্ছেদের নির্দেশ দেয় আদালত। হাই কোর্টও এ বার সেই নির্দেশই বহাল রাখল। শ্বশুরবাড়িতে মহিলাদের উপর অত্যাচার ঠেকানোর আইনের অপব্যবহার প্রসঙ্গে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টও সতর্ক করেছে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, স্বামীর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটানোর অস্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে নিষ্ঠুরতা সংক্রান্ত আইন। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ৪৯৮ (এ) ধারার মূল লক্ষ্য স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের নিষ্ঠুরতা থেকে মহিলাদের সুরক্ষিত রাখা। কিন্তু গত কয়েক বছরে দাম্পত্যকলহের মামলা দেশ জুড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে এই ধারার অপব্যবহারের প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছে শীর্ষ আদালত।