বধূ নির্যাতনের মামলায় অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস করল বম্বে হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
পুত্রবধূকে টিভি দেখতে না দেওয়া, মন্দিরে একা যেতে না দেওয়া কিংবা শতরঞ্চিতে ঘুমোতে দেওয়া নিষ্ঠুরতা নয়। সম্প্রতি এ কথা জানিয়েছে বম্বে হাই কোর্টের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চ। আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘লাইভ ল’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, মহারাষ্ট্রের এক গৃহবধূর মৃত্যুতে তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেদের দোষী সাব্যস্ত করেছিল নিম্ন আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্বামী। তাতে হাই কোর্ট নিম্ন আদালতের রায়কে খারিজ করে অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস করে দিয়েছে। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, যে অভিযোগগুলি মৃতার পরিবার করেছে, তার কোনওটিই আইন অনুযায়ী নিষ্ঠুরতার পর্যায়ে পড়ে না।
গৃহবধূর মৃত্যুর পর শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু নিষ্ঠুরতার অভিযোগ তুলেছিলেন তাঁর পিতা। যেমন, তাঁকে টিভি দেখতে দেওয়া হত না, প্রতিবেশীদের সঙ্গে মিশতে দেওয়া হত না, একা একা মন্দিরে যেতে দেওয়া হত না, ঘুমোতেও দেওয়া হত শতরঞ্চিতে। পাশাপাশি গৃহবধূর রান্না করা খাবার নিয়েও বিভিন্ন ধরনের ‘খোঁটা’ দেওয়া হত এবং মাঝরাতে বালতি করে জল টানতে বাধ্য করা হত বলে অভিযোগ উঠেছিল। এই ভাবে এক রাতে জল তুলতে গিয়েই গৃহবধূর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। হাই কোর্টে মামলাটি উঠলে বিচারপতি প্রতিবেশীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। তাতে জানা যায়, ওই এলাকায় জল সরবরাহই করা হত মাঝরাতের দিকে। ফলে সেখানকার প্রায় সব বাড়িতেই মাঝরাতের পরে জল তুলতে হত।
এ ছাড়া বাকি অভিযোগগুলিও মৃতার উপর মানসিক বা শারীরিক নিষ্ঠুরতার দিকে ইঙ্গিত করে না বলেই মন্তব্য বম্বে হাই কোর্টের অভয় এস বাগওয়াসের। তাঁর পর্যবেক্ষণ, শুধুমাত্র শতরঞ্চিতে ঘুমোতে দেওয়া নিষ্ঠুরতার পর্যায়ে পড়ে না। মৃতাকে কোন ধরনের খোঁটা দেওয়া হত, সেটিও স্পষ্ট নয়। প্রতিবেশীদের সঙ্গে মিশতে না দেওয়াটিও ‘হেনস্থা’ বলা যায় না। পাশাপাশি মৃতার মা ও অন্য আত্মীয়েরাও জানিয়েছেন, ওই গৃহবধূ নিষ্ঠুরতার শিকার হওয়ার কথা তাঁদের কাছে কোনও দিন জানাননি। ফলে তিনি যে নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন, এমন কোনও প্রামাণ্য নথিও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে হাই কোর্ট।