—প্রতীকী চিত্র।
সাত বছরের কন্যাকে নিয়ে আমেরিকা থেকে সোজা ভারতে চলে এসেছিলেন মহিলা। স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল তাঁর। মনোমালিন্যের কারণে দু’জনে আলাদা থাকছিলেন আমেরিকাতেই। পরে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন ওই মহিলা। ফেরার সময়ে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন শিশুটিকেও। কিন্তু তার হেফাজত দাবি করে আদালতের দ্বারস্থ হন শিশুটির বাবা।
বম্বে হাই কোর্টে এই মামলার শুনানি চলছিল। বিচারপতি অজয় গডকরী এবং বিচারপতি শ্যাম চান্ডকের বেঞ্জ জানায়, শিশুটির উন্নতির স্বার্থে তাকে জন্মস্থান আমেরিকায় ফিরিয়ে দেওয়া দরকার। তাকে অপহরণ করে ভারতে নিয়ে আসার জন্য শিশুটির মাকে ভর্ৎসনাও করেছে আদালত। তাকে তার বাবার হেফাজতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে শিশুটির মা চাইলে তাকে দেখতে আমেরিকায় যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সেই যাত্রার খরচও বাবাকেই বহন করতে বলা হয়েছে।
শিশুটির বাবা আদালতে জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। যুবক ভারতের নাগরিক হলেও বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে আমেরিকায় চলে যান। সেখানেই থাকতে শুরু করেন। ২০১৬ সালে তাঁদের কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। সময় যত গড়িয়েছে, দম্পতির সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। এক সময়ে আর তাঁরা একসঙ্গে থাকতে পারেননি। আলাদা থাকতে শুরু করেন। সন্তানের হেফাজত নিয়ে সেই থেকে দম্পতির মধ্যে টানাপড়েনের শুরু। আমেরিকার আদালতে এই মামলা গিয়েছিল। সেখানে ভাগাভাগি করে শিশুটিকে বাবা এবং মায়ের যৌথ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও তাকে নিয়ে ভারতে চলে আসেন মহিলা।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, কোনও বিশেষ কারণে নয়, শুধুমাত্র শিশুটিকে নিজের হেফাজতে রাখতে এবং তাকে স্বামীর কাছ থেকে দূরে রাখতে ভারতে নিয়ে চলে আসেন মহিলা। শিশুটির জন্ম আমেরিকায়। সে সেখানকার নাগরিক। আমেরিকার পাসপোর্টও রয়েছে তার। বাবার সঙ্গে আমেরিকায় থাকলেই শিশুটির ভাল হবে, পর্যবেক্ষণ আদালতের। সেই সঙ্গে বিচারপতিরা এ-ও জানিয়েছেন, শিশুকে মায়ের হেফাজতেই থাকতে হবে, এমন কোনও আইনি বাধ্যবাধকতা নেই।
আদালত আরও জানিয়েছে, যে ক’দিন বম্বে হাই কোর্টে এই মামলার শুনানি চলেছে, সশরীরে উপস্থিত থাকার জন্য সুদূর আমেরিকা থেকে সেখানে ছুটে ছুটে এসেছেন বাবা। এর থেকে শিশুটির প্রতি তাঁর টান এবং শিশুর উন্নতির সদিচ্ছা প্রমাণিত হয়। সেটাও তাকে বাবার হেফাজতে পাঠানোর অন্যতম কারণ।