পুলিশে্র ভ্যানে অর্ণব গোস্বামী। -ফাইল ছবি।
অন্তর্বর্তী জামিন পেলেন না রিপাবলিক টিভি-র প্রধান সম্পাদক অর্ণব গোস্বামী। মুম্বই হাইকোর্ট বৃহস্পতিবার তাঁর আর্জি নামঞ্জুর করে জানিয়েছে এ ব্যাপারে দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে আগামী কাল শুক্রবার যথাযথ নির্দেশ দেওয়া হবে।
বুধবার সকালে মুম্বইয়ে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় অর্ণবকে। ৫৩ বছরের এক ইন্টিরিয়র ডিজাইনারের আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। অর্ণবকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
বিচারপতি এস এস শিন্ধে এবং বিচারপতি এম এস কারনিককে নিয়ে গড়া মুম্বই হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন অর্ণবকে তার আর্জিতে অক্ষত নাইক এবং কেন্দ্রীয় সরকারের নামও জুড়তে বলেছে। আদালতে তাঁর আর্জির একটি কপি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও পাঠাতে বলা হয়েছে। বেঞ্চ এও জানিয়েছে আত্মঘাতী ইন্টিরিয়র ডিজাইনার অন্বয় নাইকের কন্যা আদনিয়া অন্বয় নাইকের বক্তব্যও আগামী কাল শোনা হবে। অন্বয়-কন্যা তাঁর বাবার আত্মহত্যার ঘটনার পর হওয়া এফআইআরের একটি অংশ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। দাবি জানিয়েছেন পুনর্তদন্তেরও।
আদালতে এ দিন জরুরি ভিত্তিতে অর্ণবের অন্তর্বর্তী জামিনের আর্জি জানান প্রবীণ কৌঁসুলি হরিশ সালভে। তাঁর বক্তব্য ছিল যে ভাবে অর্ণবকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা ‘অবৈধ’। ওই আত্মহত্যার ঘটনার তদন্তকে ‘পুরোপুরি অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে এ দিন অর্ণবের অন্তর্বর্তী জামিনের পক্ষে সওয়াল করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট আবাদ পণ্ডা। তাঁর বক্তব্য ছিল মামলাটি নতুন করে শুরু করার পর যে ভাবে ফের তদন্ত শুরু করা হয় তা অপরাধ আইনের নীতিবিরোধী। এর প্রেক্ষিতে বেঞ্চ বলেছে, ‘‘অবকাশের পর কোনও একটি দিনে এই সবের শুনানি হবে।’’
আরও পড়ুন- আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ, গ্রেফতার রিপাবলিক টিভির সম্পাদক অর্ণব গোস্বামী
দু’বছর আগে ২০১৮-র মে মাসে আত্মহত্যা করেন ৫৩ বছরের ইন্টিরিয়র ডিজাইনার অন্বয় নাইক ও তাঁর মা কুমুদ নাইক। তাঁদের সুইসাইড নোটে অর্ণব গোস্বামী ছাড়া আরও ২ জনের নাম ছিল। ফিরোজ শেখ ও নীতেশ সারদা। তাঁরা ৫ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা দেননি বলে সুইসাইড নোটে অভিযোগ করেছেন অন্বয়। সেই টাকা না পেয়ে আর্থিক সমস্যায় পড়েছিলেন তিনি। অন্বয় একটি ডিজাইনার সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিলেন। রিপাবলিক টিভির হয়ে কাজও করেছিল অন্বয়ের সংস্থা। কিন্তু রিপাবলিক টিভি টাকা মেটায়নি বলে অভিযোগ ছিল অন্বয়ের।
অন্বয়ের মৃত্যুর পর আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার একটি মামলা রুজু হয়েছিল। কিন্তু ২০১৯-এ সেই মামলা বন্ধ করে দেয় রায়গড় পুলিশ। পরে এ বছরের মে মাসে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ একটি টুইটে লেখেন, ‘অন্বয়ের মেয়ে আমার কাছে অভিযোগ করেছেন রিপাবলিক টিভির টাকা না দেওয়ার বিষয়টি আলিবাগ পুলিশ ঠিক মতো তদন্ত করেনি। সিআইডি-কে ওই মামলাটি পুনরায় তদন্ত করার নির্দেশ দিচ্ছি’।
অর্ণবের গ্রেফতারির পরই বিষয়টি নিয়ে টুইট করেন প্রকাশ জাভড়েকর, স্মৃতি ইরানি, এস জয়শঙ্করের মতো মন্ত্রীরা। মহারাষ্ট্রে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন তাঁরা।
এর আগে টিআরপি জালিয়াতি কাণ্ডেও অভিযোগ উঠেছিল রিপাবলিক টিভির বিরুদ্ধে।