অনিল দেশমুখ। ছবি: সংগৃহীত
মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন অনিল দেশমুখ। সোমবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে তাঁর দল ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি)।
মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিংহের আনা অভিযোগের জেরে সোমবারই অনিলের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বম্বে হাই কোর্ট। সেই রায়ের অনতিবিলম্বেই অনিলের পদত্যাগের কথা ঘোষণা করল এনসিপি।
সোমবার এনসিপির মুখপাত্র নবাব মালিক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, "আদালতের রায়ের পরই এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারের সঙ্গে দেখা করেন অনিল। শরদকে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত শুরু হওয়ার পর আর নৈতিক ভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পদে থাকা তাঁর উচিত হবে না।’
অনিলের বিরুদ্ধে ‘বসুলি’ বা তোলা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়ার অভিযোগ এনেছিলেন মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিংহ। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধবকে লেখা চিঠিতে তিনি জানিয়েছিলেন, মুম্বই পুলিশের একটি বিভাগকে প্রতি মাসে ১০০ কোটি টাকা তোলা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছিলেন অনিল। পরমবীরের ওই অভিযোগ খতিয়ে দেখার ভার সোমবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে দিয়েছে বম্বে হাই কোর্ট। এ ছাড়াও পুলিশ বিভাগে নিয়ম বহির্ভূত বদলির অভিযোগও ছিল অনিলের বিরুদ্ধে। আদালত সিবিআইকে বলেছে, এই সব অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্ট ১৫ দিনের মধ্যে জমা দিতে হবে আদালতে।
হাই কোর্টের ওই নির্দেশের পরই মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন অনিল। মহারাষ্ট্রের মহা বিকাশ অগধি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধবকে তিনি অনুরোধ করেছেন, যেন তাঁর ইস্তফাপত্রটি গ্রহণ করা হয়।
অনিলের পদত্যাগের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের বিজেপি প্রধান চন্দ্রকান্ত পাটিল। তাঁর কথায়, ‘‘উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অনিল। এ বার ধীরে ধীরে আরও অনেক বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসবে।’’
অনিল অম্বানীর বাড়ির সামনে বিস্ফোরক কাণ্ডে মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনার পদ থেকে সরানো হয় পরমবীরকে। তার কয়েক দিনের মধ্যেই মহারাষ্ট্রের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখের বিরুদ্ধে তোলা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া-সহ একাধিক অভিযোগ আনেন পরমবীর।
সোমবার অনিলের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে একাধিক আবেদনের শুনানি ছিল বম্বে হাই কোর্টে। কোর্ট জানায়, যেহেতু অনিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে ছিলেন, তাই পুলিশ বিভাগের পক্ষে নিরপেক্ষ তদন্ত করা সম্ভব নয়। এর পরই অনিলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয় সিবিআইকে।