দোষী সাব্যস্ত সলমন। বেকসুর তব্বুরা।
কালো শার্ট নাকি তাঁর কাছে ‘লাকি’। কিন্তু সেই শার্ট পরে এসেও লাভ হল না। কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা মামলায় বলিউডের সুপারস্টার সলমন খানকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিল জোধপুর আদালত। সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা।কিন্তু বলিউডের ‘ভাইজান’-এর উপর লগ্নি তো প্রায় হাজার কোটি টাকা। অতএব,জোধপুর আদালতের রায় শুনে প্রযোজক-পরিচালকদের মাথায় তো আকাশ ভেঙে পড়ার অবস্থা। মামলায় অন্য চার অভিযুক্ত ছিলেন সইফ আলি খান, তব্বু, নীলম এবং সোনালি বেন্দ্রে। কিন্তু প্রমাণের অভাবে তাঁদের বেকসুর খালাস করে দিয়েছে আদালত।সলমনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে জোধপুর সেন্ট্রাল জেলে।
মামলার রায় ঘোযণার এক দিন আগে, অর্থাত্ বুধবারেই জোধপুর পৌঁছে গিয়েছিলেন সলমন খান, তব্বুএবং সইফ আলি খান। বৃহস্পতিবার সকালে জোধপুর আদালতে টানটান উত্তেজনা। বেলা তখন সাড়ে১১টা। ২০ বছর আগের কৃষ্ণসার হরিণ শিকার মামলায় সলমন খানকে দোষী বলে ঘোষণা করে জোধপুরের আদালত।এর ঘণ্টাখানেক বাদেই সলমনের সাজা ঘোষণা করা হয়।
সলমনের আইনজীবী এইচ এম সারস্বতের দাবি ছিল, সরকারি কৌঁসুলি অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ সংগ্রহ করতেই পারেননি। মামলা সাজাতে ভুয়ো সাক্ষী দাঁড় করিয়েছেন। এমনকী, বন্দুকের গুলিতেই যে দু’টি কৃষ্ণসার হরিণের মৃত্যু হয়েছিল, তা-ও সরকারি কৌঁসুলি প্রমাণ করতে পারেননি বলে দাবি করেছেন সারস্বত। গত ২৮ মার্চ নিম্ন আদালতে কৃষ্ণসার মামলার চূড়ান্ত পর্যায়ের শুনানি শেষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ১৯৯৮-এর ১ এবং ২ অক্টোবর জোধপুরে ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ সিনেমার শুটিংয়ের মাঝে আলাদা আলাদা জায়গায় দু’টি কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা করেছিলেন সলমন খান। সেই সময় তাঁর সঙ্গে সইফ আলি খান, নীলম, তব্বু এবং সোনালি বেন্দ্রেরা ছিলেন। রাজস্থানের কঙ্কানি এলাকার গ্রামবাসীদের বক্তব্য, গুলির শব্দ শুনে তাঁরা সলমনদের জিপসি গাড়িটিকে ধাওয়া করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের ধরা যায়নি। সেই সময় চালকের আসনে ছিলেন স্বয়ং সলমন। প্রবল গতিতে গাড়ি ছুটিয়ে তাঁরা পালিয়ে যান বলে দাবি করেন গ্রামবাসীরা।
সলমন খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ অবশ্য নতুন কিছু নয়। ২০১২ সালের বহুচর্চিত ‘হিট অ্যান্ড রান’ মামলায় অভিযোগ উঠেছিল, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে এক ফুটপাথবাসীকে পিষে মেরেছেন সলমন। ঘটনায় আহত হয়েছিলেন চার জন। টানা ১৩ বছর মামলার পরেও সেই অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি।বেকসুর ছাড়া পেয়ে যান সলমন। কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা মামলাটি কিন্তু ‘হিট অ্যান্ড রান’ মামলার থেকেও পুরনো।
আরও পড়ুন: এ বার কি রক্তের নমুনা চাইবেন: কোর্ট
আরও পড়ুন: বাঘ তাড়িয়ে নিজস্বী তুললেন তরুণী!
তিন বছরের কম কারাদণ্ড মিললে, জোধপুর আদালতেই আজ জামিনের জন্য আবেদন করতে পারতেন সলমনের আইনজীবীরা। কিন্তু পাঁচ বছর কারাবাসের নির্দেশ পাওয়ার পর কিছুই করার ছিল না। কাল হয়তো সলমনের জামিনের জন্য তাঁর আইনজীবীরা উচ্চতর আদালতে আবেদন করবেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতটা সলমনের জীবনে একেবারেই নতুন। এই প্রথম তাঁকে রাত্রিবাস করতে হবে জেলের অন্দরে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।