নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র
রাজ্যসভায় আসন কমল বিজেপির। যার জেরে সংসদের উচ্চকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল শাসকজোট এনডিএ। এই পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করাতে এনডিএ শিবিরের বাইরে থাকা বন্ধু দলগুলির সাহায্য প্রয়োজন হতে পারে বিজেপির। তবে আগামী কয়েক মাসে একাধিক রাজ্যে রাজ্যসভার বেশ কয়েকটি আসনে নতুন সদস্য নির্বাচিত হবেন। সেখানে নিজেদের আসন ফের বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবে এনডিএ।
গত শনিবার রাজ্যসভায় রাকেশ সিন্হা, রাম শাকল, সোনাল মানসিংহ এবং মহেশ জেঠমলানির মেয়াদ সম্পূর্ণ হয়েছে। শাসকদল বিজেপির পরামর্শ অনুসারে এই চার জনকেই রাজ্যসভায় মনোনীত সদস্য হিসাবে নিযুক্ত করেছিলেন রাষ্ট্রপতি। চার জনের মেয়াদ পূরণ হওয়ায় ওই চার আসন খালি হল। রাজ্যসভায় বিজেপির সদস্যসংখ্যা কমে হল ৮৬। ২৪৫ আসনবিশিষ্ট রাজ্যসভায় বর্তমানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করার জন্য কোনও দল বা জোটের সঙ্গে ১১৩ জন সদস্যকে থাকতে হবে। এনডিএ-র সদস্যসংখ্যা এখন ১০১, সংখ্যাগরিষ্ঠতার তুলনায় ১২টি আসন কম।
অন্য দিকে, রাজ্যসভায় বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র ৮৭ জন সদস্য রয়েছেন। কংগ্রেসের হাতে রয়েছে ২৬টি আসন। তৃণমূলের হাতে ১৩টি আসন। আর আপ এবং ডিএমকের হাতে ১০টি করে আসন। তবে এর বাইরেও বেশ কিছু দল আছে, যারা খাতায়কলমে এনডিএ কিংবা ‘ইন্ডিয়া’— কোনও জোটেরই শরিক নয়। অন্ধ্রপ্রদেশের ওয়াইএসআর কংগ্রেসের ১১ জন, এডিএমকে-র ৪ জন, বিজেডির ৯ জন রাজ্যসভার সাংসদ রয়েছেন। অতীতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করতে বিজেপির সহায়ক হয়েছে এই দলগুলি। তবে সম্প্রতি ওড়িশার বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর নবীন পট্টনায়কের দল বিজে়ডি জানিয়েছে, তারা রাজ্যসভায় আর বিজেপিকে সমর্থন করবে না। সে ক্ষেত্রে রাজ্যসভায় এই ‘নিরপেক্ষ’ দলগুলির গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বর্তমানে রাজ্যসভায় ২০টি আসন শূন্য রয়েছে। তার মধ্যে ১১টি আসনে চলতি বছরেই ভোট হওয়ার কথা। মহারাষ্ট্র, বিহার, অসমের দু’টি এবং হরিয়ানা, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, ত্রিপুরার একটি করে রাজ্যসভার আসন রয়েছে এই তালিকায়। বিধানসভার শক্তির নিরিখে এর মধ্যে সাতটি আসনে এনডিএ-র জয়ের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। মহারাষ্ট্রেও এনডিএ অতিরিক্ত দু’টি আসনে জয়ী হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মনোনীত সদস্যদের সমর্থন নিয়ে রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যেতে পারে এনডিএ। তা ছাড়া ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সমর্থন পাওয়ার বিষয়েও আশাবাদী এনডিএ শিবির।
তেলঙ্গানায় একটি রাজ্যসভা আসনেও ভোট হওয়ার কথা। বিধানসভায় শক্তির নিরিখে এখানে জয়ী হওয়ার কথা শাসকদল কংগ্রেসের। রাজ্যসভায় শক্তি বৃদ্ধি করতে পারলে নিম্নকক্ষ লোকসভার পাশাপাশি উচ্চকক্ষেও বিরোধী দলনেতার পদটি দাবি করতে পারে কংগ্রেস।