প্রতীকী ছবি।
‘দিদিকে বলো’র ধাঁচে এ বার ‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বলো’ কর্মসূচি হাতে নিল বিজেপি। পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে জনসংযোগ বাড়াতে জনতার দরবারে খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাই।
বছর ঘুরলেই পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন। এর মধ্যে পঞ্জাব বাদে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গোয়া ও মণিপুর-এই চার ভোটমুখী রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। কেন্দ্র ও রাজ্যে উভয় জায়গায় বিজেপি সরকার থাকায় মানুষের মধ্যে স্বাভাবিক কারণে ওই রাজ্যগুলিতে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া যে রয়েছে তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। পিঠ বাঁচাতে পাঁচ বছরে সরকারের যাবতীয় ব্যর্থতার দায় মুখ্যমন্ত্রীদের ঘাড়ে ঠেলে দিয়ে বেশ কিছু রাজ্যে সরকারের শীর্ষ পদে নতুন মুখ বসানোর সিদ্ধান্ত নেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। কিন্তু তাতে যে বিশেষ লাভ হয়নি তা স্পষ্ট করে দিয়েছে সম্প্রতি হওয়া একাধিক জনমত সমীক্ষা। সূত্রের মতে, বিজেপি নেতৃত্ব যে আমজনতার পাশে রয়েছেন সেই বার্তা দিতে এ বার নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশে সরাসরি জনতার অভাব-অভিযোগ মুখোমুখি বসে শুনবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। বিজেপি সূত্রের অবশ্য দাবি, মানুষ যাতে আরও বেশি করে সরাসরি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের অভিযোগ জানাতে পারেন এবং সমস্যার যাতে সমাধান হয় সেই লক্ষ্যেই দলের সমন্বয় শাখা ওই উদ্যোগ নিয়েছে।
বিজেপি সদর দফতরে হওয়া ওই দরবারে সপ্তাহের ফি দিন কোনও এক বা একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন বলে স্থির হয়েছে। আসন্ন পুজোর দিনগুলিতে উপস্থিত থাকছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া, কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু ও রেলমন্ত্রী ও ইলেকট্রনিকস ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো। দলের সমন্বয় শাখা জানিয়েছে, ফি দিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা দু’ঘণ্টা করে উপস্থিত থাকবেন। সেখানেই তাঁরা নিজেদের অভিযোগ জানাতে পারবেন। পরবর্তী ধাপে কোনও ব্যক্তির করা অভিযোগের সমাধান হল কি না তা নজরে রাখবে সমন্বয় শাখা। পদক্ষেপ করা হলে সেই অগ্রগতি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জানিয়ে দেবে ওই শাখা।
পশ্চিমবঙ্গে ভোটের আগে মানুষের অভাব-অভিযোগ জানাতে ‘দিদিকে বলো’ বলে কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। এতে গত দশ বছরে রাজ্যবাসীর মধ্যে তৃণমূল সরকারের কাজ কিংবা স্থানীয় সমস্যার সমাধান না হওয়া নিয়ে মানুষের মনে যে অভিযোগ ছিল তা অনেকাংশে প্রশমনে সফল হয় শাসক শিবির। যার সুফল বিধানসভা ভোটে পান মমতা। এ বার অনেকটা সেই ধাঁচেই মন্ত্রীদের কাছে সরাসরি অভিযোগ জানানোর সুযোগ করে দিতে চাইছে বিজেপি। যদিও তাদের ওই কর্মসূচি আদৌ ‘দিদিকে বলো’র অনুকরণ বলে মানতে অস্বীকার করেন বিজেপি নেতারা। দলীয় নেতৃত্বের বক্তব্য, ওই কর্মসূচি ২০১৪ সালে সূচনা করেছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু। মাঝে কিছু দিন চললেও, গত দু’বছরের বেশি সময় ধরে করোনা সংক্রমণের কারণে ওই কর্মসূচি হাতে নেওয়া সম্ভবপর হয়নি। এখন যে হেতু দেশে করোনা সংক্রমণের হার নিম্নমুখী হয়েছে, তাই আবার ওই কর্মসূচি শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।