National News

চিন্তায় বিজেপি, ভোট-শীর্ষে মুসলিম মহল্লাই

দিল্লির মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় ভোটারদের দীর্ঘ লাইনের ছবি দেখা গিয়েছিল গত কালই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৩৮
Share:

ছবি: পিটিআই।

দিল্লিতে সব থেকে বেশি ভোট পড়ল মির্জা গালিবের মহল্লায়। চাঁদনি চকের বল্লীমারান কেন্দ্রে। পিছিয়ে নেই শাহিন বাগ, সীলমপুরও।

Advertisement

দিল্লির মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় ভোটারদের দীর্ঘ লাইনের ছবি দেখা গিয়েছিল গত কালই। আজ নির্বাচন কমিশনও জানিয়ে দিল, দিল্লির বল্লীমারানে সব থেকে বেশি ভোট পড়েছে— ৭১.৬ শতাংশ। সীলমপুরে ৭১.২২ শতাংশ। নাগরিকত্ব আইন পাশের পরে এই সীলমপুরেই হিংসা ছড়িয়েছিল। আর যে বিধানসভা কেন্দ্রের শাহিন বাগকে নিশানা করে ভোটের গোটা প্রচারটিই করে গেলেন অমিত শাহ, সেই ওখলাতেও ৫৮.৮৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। অরবিন্দ কেজরীবালের দলের নেতারা বলেন, বিজেপি এ বারের লড়াইটিকে ‘অমিত শাহ বনাম শাহিন’ বাগ করে তুলেছিল। বুথ-ফেরত সমীক্ষায় স্পষ্ট, শাহিন বাগ হারাচ্ছে বিজেপিকে। হইহই করে ফের ক্ষমতায় আসছেন কেজরীবালই।

এই বুথ-ফেরত সমীক্ষা মিলে গেলে কি নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকর করার পথ আরও কঠিন হয়ে পড়বে নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাছে? কেজরীবালের জয়ে বিরোধীরা অক্সিজেন পেলে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) এবং জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর)-র কাজও কি থমকে যাবে? এই আশঙ্কা এখন বিজেপি শিবিরেও। দলের এক নেতা বললেন, ‘‘বিরোধী-শাসিত রাজ্যগুলি বলছে, তাদের কর্মীরা এনপিআরের কাজ করবেন না। সে ক্ষেত্রে আঁচ তো জনগণনাতেও পড়বে!’’ অনেকটা দিশাহীন অবস্থাতেই পাল্টা চাপের কৌশল নিচ্ছে বিজেপি। হাতে ভোটার পরিচয়পত্র নিয়ে দিল্লিতে মুসলিমদের দীর্ঘ লাইন দেখে গত কালই কর্নাটকের বিজেপি টুইট করেছে, ‘‘এই কাগজ সামলে রাখুন, এনপিআর-এর সময়ে আবার কাজে লাগতে পারে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ভারত ধর্মশালা নয়, হুঁশিয়ারি রাজের

সরকার যদিও বলেছিল, এনপিআর-এর সময়ে কোনও কাগজ দেখানোর প্রয়োজন নেই। বিজেপির এক নেতার বক্তব্য, ‘‘এত দিন যাঁরা বলতেন ‘কাগজ নেহি দিখায়েঙ্গে’, তাঁদেরই অনেকে গত কাল কাগজ দেখিয়ে ভোট দিয়েছেন। তা হলে তাঁদের কাগজ না-দেখানোর পণ কোথায় গেল?’’ মঙ্গলবার ভোটের ফল দেখে বিজেপি স্থির করবে, এই বিষয় নিয়ে কতটা আক্রমণাত্মক হবে দল। সেই মতো ‘কাগজ’ নিয়ে কৌশল স্থির করা হবে।

দিল্লি ভোট শেষ হতেই আগামিকাল থেকে ফের সিএএ-এনপিআর-এনআরসি নিয়ে পথে নামছে বিরোধীরা। যোগেন্দ্র যাদবদের উদ্যোগে কাল দিল্লির মান্ডি হাউস থেকে যন্তর-মন্তর পর্যন্ত ‘সংসদ ঘেরাও’ মিছিল হবে। যে কর্নাটকের বিজেপি নেতারা ‘কাগজ দেখানো’ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন, সে রাজ্যেরই নেতা ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া বলেন, ‘‘বেশির ভাগ আঞ্চলিক দলই একসঙ্গে এসে কংগ্রেসকে সমর্থন করার কথা ভাবছে। যাতে বিজেপিকে টক্কর দেওয়া যায়।’’

এরই মধ্যে কংগ্রেস-শাসিত রাজস্থানের স্পিকার সি পি জোশী বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব আইন কেন্দ্রীয় সরকার পাশ করেছে। রাজ্য সরকারকে সেটি রূপায়ণ করতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী নাগরিকত্ব দেওয়া কেন্দ্রের বিষয়, রাজ্যের নয়।’’ দিল্লিতে বিজেপির নেতারাও জোশীর সেই মন্তব্য লুফে নিয়ে বলছেন, এ বার যদি গাঁধী পরিবারের বোধোদয় হয়! কারণ, শশী তারুর, জয়রাম রমেশ, কপিল সিব্বল— এক-এক করে অনেকেই এমন কথা বললেন। কিন্তু কংগ্রেসের বক্তব্য, সিএএ-র ভবিষ্যৎ স্থির করবে আদালত। কংগ্রেসের কাছে আসল লক্ষ্য হল, বিরোধী-শাসিত রাজ্যে এনপিআর বন্ধ করা। কারণ, এনপিআর-ই এনআরসির প্রথম ধাপ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement