প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পশ্চিমবঙ্গে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটে বেশ কিছু আসনে শাসক দল তৃণমূলের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় নিয়ে বারে বারেই প্রশ্ন তোলেন বিজেপি নেতানেত্রীরা। এ বার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য ত্রিপুরায় পঞ্চায়েত ভোটে ৭১ শতাংশ আসনই বিনা ভোটে জিতে নিল সে রাজ্যের শাসকদল বিজেপি!
আগামী ৮ অগস্ট ত্রিপুরায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোট। ১২ তারিখ গণনা। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, গ্রাম পঞ্চায়েতের মাত্র ২৯ শতাংশ আসনে ভোটদাতারা তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন! কারণ, পঞ্চায়েতের তিন স্তরের মোট ৬৮৮৯টি আসনের মধ্যে ৪৮০৫টিই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে নিয়েছেন ‘পদ্ম’ প্রতীকের প্রার্থীরা।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অসিত দাস জানিয়েছেন, গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোট হতে যাওয়া আসনগুলির মধ্যে বিজেপি ১৮০৯, সিপিএম ১২২২ এবং কংগ্রেস ৭৩১টিতে লড়ছে। বিজেপির সহযোগী তিপ্রা মথা ১৩৮টিতে। পঞ্চায়েত সমিতিতে ৫৫ শতাংশ এবং জেলা পরিষদে ১৬ শতাংশ আসনও বিনা ভোটে জিতে নিয়েছে বিজেপি। পঞ্চায়েত সমিতির ৪২৩ আসনের মধ্যে ইতিমধ্যেই তাদের ঝুলিতে ২৩৫টি। বাকি আসনগুলির মধ্যে বিজেপি ১৮৮, সিপিএম ১৪৮ এবং কংগ্রেস ৯৮টিতে লড়ছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরেই সে রাজ্যে বিরোধী বাম, কংগ্রেস এবং তৃণমূলের তরফে শাসকদলের বিরুদ্ধে হিংসা এবং ভীতিপ্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছিল। চলতি মাসের গোড়ায় দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার একটি জেলা পরিষদের আসনের সিপিএম প্রার্থী খুন হয়েছিলেন। অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি আশিস সাহা বলেন, ‘‘জনসমর্থন নেই বুঝতে পেরে পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকেই সন্ত্রাসের পথ নিয়েছিল বিজেপি। কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতা সুদীপ রায়বর্মন-সহ আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের উপর ধারাবাহিক হামলা চালিয়েছে ওরা। রাজ্যের আটটি জেলাতেই বিরোধীদের মনোনয়নে বাধা দেওয়া হয়েছে। তারই পরিণামে এই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়।’’
প্রায় তিন দশকের বাম শাসনে ইতি টেনে ২০১৮-র মার্চে বিধানসভা ভোটে আগরতলার কুর্সি দখল করেছিল বিজেপি। তার পর থেকেই পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্যদের পদত্যাগে ‘বাধ্য’ করানো শুরু হয় বলে অভিযোগ। সদস্যেরা পদ ছেড়ে দেওয়ায় ২০১৮-র ৩০ সেপ্টেম্বর রাজ্যের ৩৫৬টি ব্লকের ৩৩৮৬টি আসনে পঞ্চায়েত উপনির্বাচন হয়েছিল। কিন্তু সে বার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রায় ৯৬ শতাংশ আসন জিতে নিয়েছিল বিজেপি। বিজেপির মুখপাত্র নব্যেন্দু ভট্টাচার্যের দাবি, বিরোধীরা প্রার্থীই খুঁজে পায়নি।